ঝিনাইদহে ৫ পিবিআই কর্মকর্তার ওপর আসামিপক্ষের হামলার অভিযোগ

0

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ॥ রিমান্ডে থাকা আসামির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আলামত সংগ্রহ করতে গিয়ে আসামিপক্ষের হামলায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পাঁচ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার (৯ জানুয়ারি) রাত ১০টার দিকে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার আড়পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঝিনাইদহ পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমকেএইচ জাহাঙ্গীর হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ ঘটনায় সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হাফিজুর রহমানকে ঘরের মধ্যে আটকে রেখে মারধর করা হয়েছে বলে পিবিআইয়ের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। খবর পেয়ে কালীগঞ্জ থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পিবিআই সদস্যদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। থানা পুলিশ এ ঘটনায় মুশফিকুর রহমান ডাবলু ও তার ভাই মুশতাক আহমেদ লাভলু নামে দুজনকে আটক করেছে। আহতরা হচ্ছেন– মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল হোসেন, এসআই হুমায়ুন, এএসআই হাফিজুর রহমান, এএসআই মো. জাফর, এএসআই আব্দুল খালেক। ঝিনাইদহ পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, গত ৩০ নভেম্বর কালীগঞ্জের আড়পাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মাদ্রাসাছাত্র আল-আমিন নিখোঁজ হয়। ডিসেম্বরের ৪ তারিখে তার গলাকাটা লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। পরে মামলাটির তদন্তভার দেওয়া হয় পিবিআইকে। এ মামলায় পিবিআই কিছুদিন আগে কালীগঞ্জের আড়পাড়া গ্রামের মুশফিকুর রহমান ডাবলুর ছেলে তারিক হাসান সাব্বির এবং আব্দুস সামাদ মিল্টনের ছেলে ইয়াসিন আরাফাত হৃদয়কে গ্রেফতার করে। তাদের দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। রিমান্ডে থাকা সাব্বির হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে এবং হত্যায় ব্যবহৃত চাকু এবং সে সময় যে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মেসেজ দেওয়া হয়েছিল সেটি তাদের বাড়িতে আছে বলে জানায়।
তিনি আরও জানান, এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সোহেল হোসেন বুধবার রাত ১০টার দিকে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে আড়পাড়া গ্রামের মুশফিকুর রহমান ডাবলুর বাড়িতে আলামত উদ্ধারে যান। আলামত উদ্ধার করে গাড়িতে ওঠার সময় আসামি সাব্বিরের বাবা মুশফিকুর রহমান ডাবলু ও চাচা মুশতাক আহমেদ লাভলুর নেতৃত্বে ১২-১৩ জন ব্যক্তি পিবিআই সদস্যদের ওপর হামলা করে। সে সময় তারা এসআই সোহেলকে আটকে রেখে মারধর করে এবং হত্যাকাজে ব্যবহৃত আলামত ও মামলার ডকেট ছিনিয়ে নেয়। তারা আসামিকেও ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে থানা থেকে পুলিশ গিয়ে পিবিআই সদস্যদের উদ্ধার করে। আহত পাঁচ কর্মকর্তার মধ্যে মামলার এসআই সোহেল ও এএসআই হাফিজুরের আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাদের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আসামি সাব্বিরের চাচা কালীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান বিজু ফোনে পালটা অভিযোগ করে বলেন, ‘পিবিআই সারাদিন পুকুর ছেকে কোনও অস্ত্র পায়নি। রাতে রান্নাঘরে এসে ছোট একটি চাকু হাতে দিয়ে ছবি তুলে নিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় একজনকে ধরে রাখি। ’ এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহা. মাহফুজুর রহমান মিয়া জানান, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। বিস্তারিত পরে জানতে পারবেন।