পেঁয়াজের আপত্কালীন মজুদ বাড়াচ্ছে ভারত

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ পেঁয়াজ সংকটে সদ্য শেষ হওয়া বছরে কম ভোগান্তি হয়নি ভারতের। মসলাজাতীয় পণ্যটির শীর্ষ রফতানিকারক হওয়ার পরও বাজার নিয়ন্ত্রণে আমদানিতে ঝুঁকতে হয়েছে দেশটিকে। পাশাপাশি রফতানি বন্ধ, মজুদ কমিয়ে আনার মতো পদক্ষেপেও সংকট পিছু ছাড়েনি। এমনকি দেশটির আপত্কালীন মজুদও বাজার সামাল দিতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। তবে গত বছরের পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বছর আপত্কালীন মজুদের পরিমাণ বাড়াতে যাচ্ছে ভারত।
পেঁয়াজের সংকটকালীন বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণ রাখতে এতদিন ভারতে বাফার স্টক বা আপত্কালীন মজুদের পরিমাণ ছিল ৫৬ হাজার টন। তবে গত বছরের মসলা পণ্যটির লাগামহীন দামের পর কেন্দ্রীয় সরকার এখন এ মজুদের পরিমাণ এক লাখ টন বাড়াতে যাচ্ছে। সম্প্রতি ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত সাহার সভাপতিত্বে মন্ত্রীদের বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। সভায় ২০২০ সালে পেঁয়াজের বাফার স্টক এক লাখ টন করা সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে সরকারের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
গত বছরে ভারতের পেঁয়াজের বাফার স্টকের দায়িত্বে ছিল ন্যাশনাল এগ্রিকালচার কো-অপারেটিভ মার্কেটিং ফেডারেশন (এনএএফইডি)। এ বছরও পেঁয়াজ সংগ্রহ ও মজুদের দায়িত্বে থাকবে সরকারি প্রতিষ্ঠানটি। সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে পেঁয়াজ কিনে সংরক্ষণ করবে এনএএফইডি। সরকারি এ কর্মকর্তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী, রবি মৌসুমে (শীতকালীন) উৎপাদন হওয়া পেঁয়াজ কিনে সরকারি বাফার স্টকে রাখা হবে। কারণ এসব পেঁয়াজ বেশিদিন মজুদ রাখা যায়। মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত পণ্যটির মজুদ রাখতে সক্ষম হবে প্রতিষ্ঠানটি।
ভারতে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয় মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকে। তবে এ মৌসুমে রাজ্য দুটিতে অসময় ভারি বৃষ্টিপাতে খরিফ ও খরিফ পরবর্তী পেঁয়াজের উৎপাদন ২৬ শতাংশ ব্যাহত হয়। একই কারণে দেশটির বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসতেও বিলম্ব হয়। ফলে পেঁয়াজ সংকটে দেশটির বাজারে দাম বাড়তে থাকে। দাম বাড়তে বাড়তে দেশটিতে কেজিপ্রতি ১৫০ রুপি পর্যন্ত পৌঁছায়। দাম বৃদ্ধির জেরে সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে দেশটি থেকে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয় সরকার। পাশাপাশি খুচরা ও পাইকারি পর্যায়ে মজুদ সীমিতকরণ, কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বাজারে কঠোর নজরদারি শুরু হয়। কেন্দ্রীয় সরকার বাফার স্টক থেকে বিভিন্ন রাজ্যে পেঁয়াজ সরবরাহ শুরু করে। এতেও বাজার স্থিতিশীল না হওয়ায় দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান এমএমটিসির মাধ্যমে তুরস্ক, মিসর ও আফগানিস্তান থেকে প্রায় ৪৫ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করে সরকার।