মুখে দিয়ে লিখে জিপিএ-৫ অর্জন লিতুন জিরার

0

স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর (যশোর)॥ যশোরে দুই হাত-পা ছাড়াই জন্ম নেয়া লিতুন জিরা মুখে ভর দিয়ে লিখেই এবার প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে। লিতুন জিরা মণিরামপুর উপজেলার শেখপাড়া খানপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে। সে খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিইসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। লিতুন জিরার বাবা হাবিবুর রহমান ও মা জাহানারা বেগম জানান, জন্মের পর মেয়ের ভবিষ্যত নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতের তারা। এখন মেয়ের মেধা তাদের আশার সঞ্চার করছে। লিতুন জিরা আর দশজন শিশুর মতো স্বাভাবিকভাবেই খাওয়া-দাওয়া, গোছল সব কিছুই করতে পারে। মুখ দিয়েই লিখে সে। তার চমৎকার লেখা যে কারো দৃষ্টি কাড়বে। লিতুনের একটাই ইচ্ছা, পর নির্ভরশীল না হয়ে লেখা পড়া শিখে সে নিজেই কিছু করতে চায়।
খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাজেদা খাতুন জানান, ২৯ বছর শিক্ষকতা জীবনে তিনি লিতুন জিরার মতো মেধাবী শিক্ষার্থীর দেখা পাননি। শুধু লেখা-পড়ায় না, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে অন্যদের থেকে অনেক ভাল সে। তিনি জানান, দুই হাত-পা ছাড়া জন্ম নেয়া লিতুন জিরা প্রবল ইচ্ছাশক্তি আর মেধার বিকাশে মুখ দিয়ে লিখেই মেধার স্বাক্ষর রেখেছে। লিতুনের পিতা কলেজ শিক হাবিবুর রহমান জানান,লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহী লিতুন জিরা হুইল চেয়ারে করে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করে। একমাত্র চলাচলের বাহন হুইল চেয়ারটি একপর্যায়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বিদ্যালয়ে লিতুনের যাওয়াআসা প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম দেখা দেয়। ১৭ বছর যাবত কলেজে চাকুরি করলেও আজও এমপিওভূক্তি হয়নি ওই প্রতিষ্ঠানটি। ফলে অর্থনৈতিক অনটনের জন্য মেয়ের চাহিদা মিটাতে হিমশিম খান হাবিবুর রহমান।