নাগরিকত্ব আইন ভারতীয় মুসলিমদের ওপর প্রভাব ফেলবে: মার্কিন থিঙ্কট্যাঙ্ক

0

লোকসমাজ ডেস্ক ॥ ভারতের নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) দেশটির ২০ কোটি মুসলিম নাগরিকের সার্বিক অবস্থার ওপর প্রভাব ফেলবে উল্লেখ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন কংগ্রেসের থিঙ্কট্যাঙ্ক কংগ্রেসনাল রিসার্চ সার্ভিস (সিআরএস)। সম্প্রতি প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে সিএএ’র প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ধর্মীয় কারণে নির্যাতনের শিকার সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দিতে ১১ ডিসেম্বর নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করেছে ভারত। হিন্দু, খ্রিস্টান, জৈন, বৌদ্ধ ও পার্সিদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হলেও এতে মুসলমানদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এর প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চলছে। আর এই আইনকে বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়ে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া ভিত্তিক ভারপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যালিস ওয়েলস সিএএ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘সিএএ-র মতো সামাজিক ইস্যুগুলো যে শুধুই মূল্যবোধকে অগ্রাধিকার দেওয়ার ব্যাপারে ভারতের আন্তরিকতাকে ক্ষুণ্ণ করবে, তা নয়; ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার দেশগুলোতে আমরা (যুক্তরাষ্ট্র) যে মুক্ত ও অবাধ স্বাধীনতার বাতাবরণ তৈরি করতে চাচ্ছি, সেই প্রচেষ্টায় শামিল হওয়ার পথ থেকেও ভারতকে দূরে সরিয়ে দেবে।’
সিআরএস’র সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত শুধুই বিদেশি আগ্রাসনকারীদের হাতে লু্ণ্ঠিত হয়েছে, এভাবেই সেদেশের ইতিহাসকে ব্যাখ্যা করতে চাচ্ছেন ‘হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা’। শুধু এভাবেই তারা বিষয়টিকে দেখছেন ও দেখাতে চাচ্ছেন। এর ফলে তারা আধুনিক ভারতের দুই প্রতিষ্ঠাতা জওহরলাল নেহরু ও মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর ‘ধর্মনিরপেক্ষতার ভাবাদর্শ’কেও বাতিল করে দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘বহু বিশেষজ্ঞের ধারণা- দেশের উত্তরোত্তর ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতি থেকে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরিয়ে রাজনৈতিক সমর্থন ধরে রাখতে বিজেপি সরকার এখন আবেগের ওপরেই গুরুত্ব দিচ্ছে। এজন্য তারা ধর্মকে হাতিয়ার করছে।’ উল্লেখ্য, মার্কিন কংগ্রেসের থিঙ্কট্যাঙ্ক কংগ্রেসনাল রিসার্চ সার্ভিসের (সিআরএস) প্রতিবেদন সরকারিভাবে করা হয়নি। এই প্রতিবেদন কংগ্রেসের সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের মতামতের ভিত্তিতেই তৈরি করা হয়েছে।