৩০০ কোটি টাকার বেড়িবাঁধে ফাটল

আজ সিডর দিবস

0

নজরুল ইসলাম আকন,শরণখোলা(বাগেরহাট)॥ আজ ১৫ নভেম্বর। সিডর দিবস। উপকূলবাসীর জন্যে এক ভয়াবহ দিন। সিডরের পর ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধ স্বস্তি ফেরাতে পারেনি সিডর বিধ্বস্ত শরণখোলাবাসীর। বাঁধ নির্মাণের এক বছর পরই এর বিভিন্ন অংশে দেখা দেয় ফাটল ও ধস।

বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার বলেশ্বর নদ তীবরর্তী ৩৫/১ নং পোল্ডারের বেড়িবাঁধের গাবতলা ও রাজেশ্বর এলাকার প্রায় দুই কিলোমিটার বাঁধের রিভারসাইডের মাটিসহ ব্লক ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে বাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশংকা করছেন এলাকাবাসী।

২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর উপকূলে আঘাত হানে সুপার সাইক্লোন সিডর । আজ থেকে ১৮ বছর আগে এইদিনে মুহূর্তেই লন্ডভন্ড হয়ে যায় সাগর পাড়ের কয়েকটি জেলা। সিডরের আঘাতের গতিবেগ ছিলো ঘন্টায় ২৬০ কিলোমিটার। উপকূলে ১৫/২০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস সৃষ্টি হয়।

এ সময় শরণখোলার প্রায় ২০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে তছনছ হয়ে যায়। সিডরে সবসেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ও রায়েন্দা ইউনিয়ন। এখানে সহাস্রাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। এছাড়া মারা যায় প্রায় ১২ হাজার গরাদিপশু। গৃহহীন হয় আট হাজার পরিবার। এ অবস্থায় এ জনপদের মানুষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ওই সময় বিশ্ব ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় শরণখোলা- মোরেলগঞ্জ উপজেলার ৩৫/১ পোল্ডারে ৬২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়।

এ প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৩০০ কোটি টাকা। চায়নার সিএইচডব্লিউ নামের একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজের দায়িত্ব পায়। ২০১৬ সালে কাজ শুরু হয় ও ২০১৯ সালে বাঁধের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা শেষ হয় ২০২৩ সালে। কিন্ত বাঁধটির নির্মাণ কাজ শেষ হতে না হতেই এর বিভিন্ন পয়েন্টে দেখা দেয় ভাঙন ও ধস। ইতোমধ্যে বাঁধের গাবতলা,বাজেশ্বর,বড়ইতলা,রায়েন্দা রাজৈর এলাকার দুই কিলোমিটার জায়গার মাটিসহ ব্লক ধসে গেছে।

শরণখোলা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন পঞ্চায়েত বলেন, বাঁধের অধিক ভাঙন প্রবণ এলাকায় নদী শাসনের ব্যবস্থা না থাকায় নদীর গভীর স্রোতে রাতে বাঁধের ব্লক ধসে পড়ছে। শরণখোলা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেন মিলন বলেন, বাঁধ ধসে পড়ার অন্যতম কারণ ঠিকাদার ও তার সহযোগীদের অনিয়ম ও দুর্নীতি ।

বাগেরহাট জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল্ মামুন জানান, ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সংস্কারের জন্যে ইতোমধে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পে নদী শাসনের ব্যবস্থাও থাকছে।