দেশবিরোধী একটি অপছায়া দেশের ওপর পাখা মেলছে : নার্গিস বেগম

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম বলেছেন, চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট দেশবিরোধী অপশক্তিকে বিদায় করার পর আমরা নতুন সূর্যোদয়ের আকাক্সক্ষা এবং নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলাম। সেই স্বপ্নকে চুরমার করার জন্য দেশবিরোধী একটি অপছায়া দেশের ওপর পাখা মেলছে। দেশবিরোধী অপশক্তি এবং তাদের ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করতে নতুন করে শপথ নিতে হবে।

ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে যশোর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে জেলা বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

আলোচনার পূর্বে জেলা পরিষদ চত্বরে জিয়া স্মৃতি পাঠাগার আয়োজিত বই মেলার উদ্বোধন করেন অধ্যাপক নার্গিস বেগম।

আলোচনা সভায় অধ্যাপক নার্গিস বেগম আরও বলেন, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে সুরক্ষা দেওয়ার অঙ্গীকার এবং দেশের মাটি ও মানুষের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করার ব্রত নিয়ে আমরা বিএনপির রাজনীতি করি। আমাদের সামনে শহীদ জিয়াউর রহমান এবং বেগম খালেদা জিয়ার মতো নেতৃত্ব এবং আদর্শ রয়েছে। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে প্রতিটি সংকটে সমস্যাকে অত্যন্ত শক্তভাবে মোকাবিলা করা।

তিনি বলেন, এই দেশ বারবার সংকটে পড়েছে। কিন্তু ইতিহাস বলে, প্রতিটি সংকটে দেশের সাধারণ মানুষ ঢাল হয়ে দাঁড়ানোর পাশাপাশি অপশক্তিকে পরাজিত করে বিজয় অর্জন করেছে। সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে আবারও দেশবিরোধী সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের আকাক্সক্ষা জনগণের গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হবে। সেই বাংলাদেশ গড়ার একটি মাত্র উপায় সমগ্র দেশে ধানের শীষের জোয়ার সৃষ্টি করতে হবে। যার যার অবস্থান থেকে দেশরক্ষার প্রতীক ধানের শীষকে শীর্ষে রাখতে হবে। জিয়াউর রহমানের স্বপ্নের বাংলাদেশ এবং বেগম খালেদা জিয়ার অসামান্য ত্যাগের বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়তে হবে। তার জন্য সকলে বিভেদ ভুলে রাজপথে ঐক্যবদ্ধভাবে থেকে বিজয় ছিনিয়ে আনতে হবে।

আলোচনা সভায় প্রধান বক্তার বক্তৃতায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) এবং ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৩ (সদর) আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে নির্বাচনকে অনিশ্চিত করার মাধ্যমে বাংলাদেশকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় নতুন করে জিয়াউর রহমানের সৈনিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার শপথ নিতে হবে। ঠিক যেভাবে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে চব্বিশে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা এবং আশির দশকে স্বৈরচারী এরশাদের পতন ঘটিয়েছি, ঠিক একইভাবে বাংলাদেশের অস্তিত্বের প্রয়োজনে এবং জনগণের কাক্সিক্ষত নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

তিনি বলেন, মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সাহসিকতার গৌরবজ্জ্বল ভূমিকার কারণে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর দেশকে ঐক্যবদ্ধ করার অভিপ্রায়ে বিকল্প নেতৃত্ব ও ব্যক্তিকে খুঁজে না পাওয়ার কারণে সিপাহী-জনতা তাকে মুক্ত করে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আসীন করেন।

একজন সামরিক কর্মকর্তা হয়েও তিনি উপলব্ধি করেছিলেন, একটি দেশ গণতন্ত্রহীন থাকতে পারে না। তিনি সামরিক শাসনের পরিবর্তে গণতন্ত্র কায়েম করার জন্য নির্বাচনী ব্যবস্থা চালু করেন। যে নির্বাচনের মাধ্যমে শেখ মুজিবের হাতে বিলুপ্ত আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। আজ যারা ভারতে বসে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করেছে জিয়াউর রহমানের আনুকূল্য ও করুণা নিয়ে তারাই সেদিন দেশে ফেরার সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু তাদের ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে জিয়াউর রহমানকে নির্মমভাবে জীবন দিতে হয়েছে। স্বাধীনতার আগে-পরেও বারবার দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে, ষড়যন্ত্র হয়েছে জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে। কারণ বাংলাদেশের ভাগ্যের সঙ্গে জিয়া পরিবারের ভাগ্য অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। বিএনপির একটি কর্মী বেঁচে থাকতে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করা যাবে না।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু।আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এহসানুল হক সেতু প্রমুখ। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম।