টাউন হল মাঠে দলমত নির্বিশেষে মানুষের ঢল

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপির প্রয়াত স্থায়ী কমিটির সদস্য, বর্ষীয়ান রাজনীতিক ও যশোরের গণমানুষের নেতা তরিকুল ইসলামের স্মরণসভায় দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে। বৃহস্পতিবার বিকেলে শহরের ঐতিহাসিক মুনসী মেহেরউল্লাহ ময়দানে (টাউন হল ময়দান) যশোর জেলা বিএনপির আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় এ স্মরণসভা।

স্মরণসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি প্রয়াত তরিকুল ইসলামের রাজনৈতিক জীবন ও অবদানের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘তরিকুল ইসলাম ছিলেন সত্যিকার অর্থে জনগণের নেতা। তিনি সব সময় দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। তাঁর মতো নেতাই আজকের বাংলাদেশে সবচেয়ে প্রয়োজন।’

দুপুরের পর থেকেই যশোর জেলা শহর ও আশপাশের উপজেলা, থানা থেকে দলে দলে নেতাকর্মীরা মুনসী মেহেরউল¬াহ ময়দানে আসতে থাকেন। কেউ বাসে, কেউ পায়ে হেঁটে, আবার কেউ রিকশা বা মোটরসাইকেলে করে আসেন। ময়দানে প্রবেশের সময় কেউ কোনো স্লোগান বা মিছিল করেননি; বরং সবাই শান্তিপূর্ণভাবে সারিবদ্ধ হয়ে অনুষ্ঠানে যোগ দেন। বেলা তিনটার আগেই টাউন হল ময়দান জনসমুদ্রে পরিণত হয়।

বিএনপির নেতাকর্মীদের পাশাপাশি স্মরণসভায় সাধারণ মানুষ, দিনমজুর, রিকশা ও ভ্যানচালক, ইজিবাইক চালক, দোকান কর্মচারীসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। তাঁদের উপস্থিতি প্রমাণ করে, তরিকুল ইসলাম শুধু একজন রাজনৈতিক নেতা ছিলেন না, তিনি ছিলেন সাধারণ মানুষের আস্থার প্রতীক।

স্মরণসভায় বক্তারা বলেন, তরিকুল ইসলাম যশোর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের রাজনীতিতে এক উজ্জ্বল অধ্যায় রচনা করে গেছেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতিতে যুক্ত হন এবং পাকিস্তান আমল থেকে শুরু করে স্বাধীনতার পর পর্যন্ত রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি গণমানুষের অধিকারের প্রশ্নে আপসহীন ছিলেন।

বিএনপি নেতারা বলেন, আজ দেশে গণতন্ত্র বিপর্যস্ত অবস্থায় আছে; তরিকুল ইসলামের মতো ত্যাগী, সাহসী ও আদর্শবান নেতার অভাব গভীরভাবে অনুভূত হচ্ছে। তাঁরা বলেন, ‘যে মানুষ জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত জনগণের জন্য রাজনীতি করেছেন, তিনি আজও আমাদের পথপ্রদর্শক হয়ে আছেন।’

স্মরণসভা শেষে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রয়াত তরিকুল ইসলামের রুহের মাগফিরাত কামনা করা হয়।

তরিকুল ইসলাম ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পর থেকে প্রতিবছর তাঁর স্মরণে যশোরে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে বিএনপি ও সর্বস্তরের মানুষ।