অস্বাভাবিক বাড়ল পেঁয়াজের দাম কমেছে চাল ও সবজির দর

0

শেখ আব্দুল্লাহ হুসাইন ॥ কয়েকদিনের হালকা বৃষ্টিপাতের কারণে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিকহারে। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ১৫ টাকা। ডিমের দামও বাড়ার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। তবে পর্যাপ্ত আমদানির কারণে চালের বাজার স্বাভাবিক রয়েছে। এ সপ্তাহে প্রতি কেজি চালে কমেছে ৪ টাকা। এদিকে শীতকালীন সবজির বাজারেও স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে। এ সপ্তাহে বেশ কিছু সবজির কেজিতে ৪০ টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে।

ভোক্তারা বলছেন বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ প্রচুর থাকার পরও ব্যবসায়ীরা বৃষ্টির অজুহাতে দাম বাড়িয়েছেন। রোববার যশোর শহরের বড় বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। মাত্র গত সপ্তাহেও প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল ৭৫ টাকায়। কয়েকদিনের হালকা বৃষ্টিতে রোববার থেকে প্রতি কেজিতে ১৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়।

বড় বাজারের খুচরা বিক্রেতা জয়দেব সাহা জানান, পাইকারি বাজরে দাম বেশি তাই ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় বাজার কালীবাড়ি এলাকার আড়তদার ‘নিতাই গৌর ভাণ্ডার’-এর অন্যতম স্বত্বাধিকারী নিতাই সাহা জানান, যশোরে দেশি পেঁয়াজ ফরিদপুর ও রাজবাড়ি জেলা থেকে আসে। কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে সেখানে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। তবে রোববার বাজারে আসা ক্রেতা রবিউল ইসলাম বলেন, বাজারে পেঁয়াজের প্রচুর সরবরাহ আছে, তারপরও কয়েকদিনের সামান্য বৃষ্টির অজুহাতে ব্যবসায়ীরাই দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।

বাজারে খামারের মুরগির বাদামি রঙের ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৪৪ টাকা আর সাদা রঙের ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৪২ টাকায়। বড় বাজারের ‘সালাম ডিম স্টোর’-এর স্বত্বাধিকারী আবু কালাম জানান, তিনি আশঙ্কা করছেন চাহিদা বাড়ায় ডিমের দাম দু একদিনের মধ্যে আরও বাড়তে পারে।

এদিকে বাজারে চালের দাম এ সপ্তাহে প্রতি কেজিতে ৪ টাকা কমেছে। রোববার বড় বাজার চালবাজারে বাংলামতি চাল মানভেদে প্রতি কেজি ৭৬ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০ থেকে ৮৪ টাকা। মিনিকেট বিক্রি হয়েছে ৫৬-৬২ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৬২-৬৪ টাকা। বিআর-৬৩ চাল বিক্রি হয়েছে ৬০-৬৪ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৬৪-৬৬ টাকা। বিআর-৪৯ চাল বিক্রি হয়েছে ৪৮-৫৪ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৫০-৫২ টাকা। কাজললতা বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৬৪ টাকা। স্বর্ণা বিক্রি হয়েছে ৪৮-৫০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৫০ টাকা ও হীরা চাল বিক্রি হয়েছে ৪২ টাকা, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা।

যশোর চাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সুশীল কুমার বিশ্বাস লোকসমাজকে জানান, বাজারে পর্যাপ্ত চালের সরবরাহ আছে। তাছাড়া বিদেশ থেকে প্রচুর পরিমাণ চাল আমদানি হয়ে আসছে। যে কারণে চালের বাজার স্বাভাবিক রয়েছে।

অপরদিকে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বাড়ায় বড় বাজারে ভোক্তাদের মাঝে কিছুটা স্বস্তি দেখা গেছে। এ সপ্তাহে বেশ কিছু সবজির কেজিতে ৪০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।

রোববার বড় বাজারে খুচরা বিক্রেতা কৃষ্ণ চন্দ্র দাস ফুলকপি ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন, গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ১০০ টাকা। বাঁধাকপি বিক্রি করেছেন ৪০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৮০ টাকা। শিম বিক্রি করেছেন ৫০-৬০ টাকা দরে, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৮০ টাকা। বেগুন বিক্রি করেছেন ৭০ টাকায়, গত সপ্তাহে ছিল ১০০ টাকা। তবে গাজর আর টমেটো এখনও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতা কৃষ্ণ চন্দ্র দাস আশা করছেন আগামী দু সপ্তাহের মধ্যে বাজারে সরবরাহ বেড়ে টমেটো ও গাজরের দাম কমে আসবে।