দিঘলিয়ায় শিশু জিসান হত্যাকারীর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

0

খুলনা ব্যুরো ॥ খুলনার দিঘলিয়ায় শিশু জিসান হত্যাকারীর বাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। রোববার সকালে উপজেলার দেয়াড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ হত্যাকারীর মা-বাবাকে গ্রেফতার করেছে।

শিশু জিসানকে হত্যার পর তার লাশ মাটি চাপা দিয়ে গুম করার সহযোগিতার অভিযোগে হত্যাকারী ফয়সালের মা মাহিনুর বেগম ও হান্নান গোলদারকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে খুলনা নগরীর দৌলতপুর এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দিঘলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এইচ এম শাহীন।

অপরদিকে, হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে রোববার বেলা ১১টায় উপজেলার দেয়াড়া খেয়াঘাট মোড়ে এলাকাবাসী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক মনিবুর রহমান, শেখ আবু জাফর, শেখ মামুন আলম, মোল্লা নাজমুল হক, শেখ মিল্টন, মোল্লা রাজু আহমেদ, আব্দুল কাদের জনি, মোহাম্মদ আলী টুটুল, আনোয়ার হোসেন, মোল্লা মাহমুদুল হাসান মিঠু, হালিম খলিফা, সোহেল জাফর মঈন, রাজীব আহমেদ প্রমুখ।

দিঘলিয়া থানার ওসি এইচ এম শাহীন হত্যাকাণ্ডের কারণ জানাতে গিয়ে বলেন, গ্রেফতারকৃত যুবক ফয়সাল মাদকাসক্ত। সে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের অসংলগ্ন কথা বলছে। কখনো বলছে তাকে গালি দেওয়ার কারণে ক্ষোভে সে হত্যা করেছে, যা গ্রহণযোগ্য নয়। তবে তাদের মধ্যে পূর্ব শত্রুতার কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

তিনি বলেন, শিশু জিসানকে কুপিয়ে হত্যার পর হত্যাকারী ফয়সালকে বাঁচাতে তার মা-বাবা লাশটি মাটিতে পুঁতে গুম করতে সহযোগিতা করেন বলে স্বীকার করেছেন। এ কারণে তাদেরকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
তারা এ বিষয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েছেন। এ ঘটনায় জিসানের পিতা আলমগীর হোসেন রোববার রাতে ফয়সাল ও তার মা-বাবাকে আসামি করে হত্যা ও গুমের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছেন।

উল্লেখ্য,গত শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে দিঘলিয়া উপজেলার দেয়াড়া খেয়াঘাট সংলগ্ন এলাকা থেকে তিন দিন নিখোঁজের পর জিসান (৭) নামের এক শিশুর হাত পা বাঁধা বস্তাবন্দী লাশ বাড়ির উঠানে মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ ও যৌথবাহিনী। শিশু জিসানের পিতা আলমগীর হোসেন দেয়াড়ায় অবস্থিত জুট টেক্সটাইল মিলে (মণ্ডল মিল) মেকানিক্যাল পদে চাকরি করেন।

পুলিশ জানায়, গত ৯ অক্টোবর বিকেল থেকে শিশু জিসান নিখোঁজ হয়। পরবর্তীতে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায় না। এ ঘটনায় জিসানের পিতা আলমগীর হোসেন ওইদিনই থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। ডায়েরি তদন্ত করতে গিয়ে সিসি টিভির ফুটেজে পার্শ্ববর্তী দেয়াড়া গ্রামের হান্নান শেখের পুত্র ফয়সালের সঙ্গে সর্বশেষ তাকে দেখা যায়। সে মোতাবেক ফয়সালকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর সে হত্যার কথা স্বীকার করে।