বাগেরহাটে সংসদীয় আসন কমানোর প্রতিবাদে হরতাল পালিত

0

বাগেরহাট সংবাদদাতা॥ বাগেরহাটের সংসদীয় ৪ টি আসন থেকে একটি কমানোর প্রতিবাদে গতকাল সকাল- সন্ধ্যা হরতাল পালিত হয়েছে। জেলা নির্বাচন অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। হরতালের কারণে সকাল থেকে বন্ধ ছিল অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল। ফলে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।

সোমবার সকাল ৮টা থেকে হরতাল ও সড়কপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন শুরু হয়। এ কর্মসূচি
চলে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত।

বাগেরহাট মহাসড়কের কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে, খুলনা-ঢাকা মহাসড়কের দশানী, নওয়াপাড়া, কাটাখালি, মোল্লাহাট সেতু, বাগেরহাট- পিরোজপুর মহাসড়কের সাইনবোর্ড বাজার, খুলনা -মোংলা মহাসড়কের ফয়লা, মোংলা বাসস্ট্যান্ডসহ জেলার অন্তত ২০টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সড়কের ওপর গাড়ি, গাছের গুঁড়ি ও বেঞ্চ রেখে অবরোধ করেন সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতাকর্মীরা।হরতালের অংশ হিসেবে নেতাকর্মীরা সকাল সাড়ে আটটার দিকে জেলা নির্বাচন অফিসের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেয়। পরে মিছিলসহকারে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আসেন হরতালকারীরা। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রধান ফটকে সামনে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ডা. ফকরুল হাসানের গাড়ি আটকে দেওয়া হয়।

পরে তিনি হেটে নিজ কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। নেতাকর্মীরা এসে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। পৌনে নয়টার দিকে জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল হাসানকে তার কার্যালয়ে প্রবেশ করতে বাধা দেয়। পরে তিনি নিজের অফিসে প্রবেশ না করে জেলা ত্রাণ, দুর্যোগ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রবেশ করেন।

সকাল থেকে এসব কর্মসূচিতে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজাফফর রহমান আলম, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা রেজাউল করিম, সেক্রেটারি শেখ মুহাম্মদ ইউনুস, বিএনপি নেতা ফকির তারিকুল ইসলামসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাটে চারটি আসন ছিল।৩০ জুলাই দুপুরে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি অংশ কমিয়ে জেলায় তিনটি আসন করার প্রাথমিক প্রস্তাব দেয় নির্বাচন কমিশন। এরপর থেকেই বাগেরহাটবাসী আন্দোলন শুরু করে। চারটি আসন বহল রাখার দাবিতে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন বাগেরহাটের নেতাকর্মীরা। তার বিপরীতে গেল ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন শুধু সীমানা পরিবর্তন করে তিনটি আসনই জারি রেখে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে।

মোল্লাহাট (বাগেরহাট) সংবাদদাতা জানান, ভোর থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ বাগেরহাটের প্রবেশদ্বার মোল্লাহাট মধুমতি নদীর আবুল খায়ের সেতুর মুখে মহাসড়কে সমবেত হয়ে হরতালের সমর্থনে স্লোগান দেন ও সমাবেশ করেন।

উপজেলা বিএনপির সভাপতি শেখ হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হারুন আল রশীদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ ওয়াহিদুজ্জামান দিপু, সাবেক এমপি শেখ মুজিবুর রহমান, উপজেলা জামায়াতের আমির মো. হাসমত আলী সরদার প্রমুখ।

শরণখোলা (বাগেরহাট) সংবাদদাতা জানান, শরণখোলায় সর্বাত্মক হরতাল ও অবরোধ পালিত হয়েছে। সকাল থেকেই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিএনপি, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এনসিপিসহ সর্বদলীয় ঐক্যের নেতাকর্মীরা।