মহেশপুরে স্বৈরাচারের আমলে বসানো বায়োমেট্রিক হাজিরার যন্ত্র পড়ে আছে অকেজো

0

জিয়াউর রহমান জিয়া, মহেশপুর (ঝিনাইদহ)॥ স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আমলে শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে ঝিনাইদহের মহেশপুরে ১৫২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপন করা হয় ডিজিটাল বায়োমেট্রিক হাজিরার যন্ত্র। কেনাকাটায় সীমাহীন দুর্নীতি হওয়ায় যেসব বিদ্যালয়ে যন্ত্রটি বসানো হয় তার সবই নষ্ট হয়ে গেছে। স্থাপনের কয়েক মাস যেতে না যেতেই বেশিরভাগ মেশিন অকেজো হয়ে পড়েছে।

প্রকল্প বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে দুর্নীতির কারণেই এ উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অনেক শিক্ষক।

স্কুল লেভেল ইমপ্রুভমেন্ট প্লান (স্লিপ) প্রকল্পের আওতায় ২০১৯ সালে উপজেলার ১৫২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হাজিরা মনিটরিংয়ের জন্যে এসব বায়োমেট্রিক মেশিন বসানো হয়। প্রতিটি বিদ্যালয় থেকে নেওয়া হয় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে। তবে মেশিনগুলো কার্যকর ছিল মাত্র ৪ থেকে ৫ মাস। এরপর থেকে তা অচল হয়ে পড়ে। অন্যদিকে শিক্ষক হাজিরা মনিটরিংয়ের জন্যে বায়োমেট্রিক মেশিন বসানো হলেও শিক্ষকদের হাজিরা নিশ্চতের কোন ডিভাইস বা মনিটর ছিলো না উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে।

শিক্ষকদের অভিযোগ, উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে চাপ প্রয়োগ করে দ্রত সময়ের মধ্যে তাদের হাজিরা মেশিন কিনতে বলা হয়েছিল। তখন তারা বাজারমূল্যেও চেয়ে দ্বিগুণ দামে তা কিনতে বাধ্য হন। শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে নির্ধারিত কোম্পানি ও সিন্ডিকেটের নিকট থেকে মেশিন কেনায় বাজার যাচাই-বাছাইয়ের সুযোগ পাননি তারা।

পাতিবিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা স্লিপ ফান্ডের টাকা দিয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসের হাজিরা মেশিন কিনেছিলাম। কিন্তু সংযোগ না থাকায় ব্যবহার করা হয়নি। মেশিন এখন নষ্ট হয়ে পড়ে আছে।

পাথরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ২০ হাজার টাকা দিয়ে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন কিনেছিলাম। ৪-৫ মাস না যেতেই তা নষ্ট হয়ে পড়ে আছে।

মহেশপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, নিম্নমানের মেশিন সরবরাহ ও প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে এ অবস্থা হয়েছে। তিনি আরও শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিতকরণে অফিসে একটি ডিভাইস ও মনিটর থাকার কথা। সেটিও নেই। বিগত সরকারের সময়ে শুধু স্কুলে ডিজিটাল বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন বসিয়ে সরকারের টাকা অপচয় করা হয়েছে।