মুক্তেশ্বরী নদী দখল-ভরাটের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর প্রতিরোধ : ‘বিল হরিণা বাঁচাও’ ঘোষণা

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরের মুক্তেশ্বরী নদী দখল করে প্লট বিক্রির অপচেষ্টা রুখে দিতে একজোট হয়েছেন এলাকাবাসী। নদী দখলমুক্ত করা এবং বিল হরিণার জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে সরব হয়েছেন এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ। রোববার দুপুরে যশোর সদর উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়নের ভাতুড়িয়ায় মুক্তেশ্বরী নদীর পাড়ে আয়োজিত এক কৃষক সমাবেশ থেকে এই প্রতিরোধ ঘোষণা করা হয়।

‘বিল হরিণা বাঁচাও আন্দোলন’ এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) যৌথভাবে এই কৃষক সমাবেশের আয়োজন করে। দখল করে প্লট তৈরির ঠিক পাশেই অনুষ্ঠিত হয় এই সমাবেশ। বক্তারা অভিযোগ করেন, ভূমিদস্যুরা নদীর প্রবাহ বন্ধ করে প্লট তৈরি করছে, যা বন্ধ না হলে বিল হরিণার কৃষি ও পরিবেশ পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে।

সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাপা’র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাপা’র কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। বক্তারা জানান, নদী দখল ও জলাবদ্ধতার কারণে বিল হরিণার প্রায় ৩,৭০০ বিঘা জমিতে কোনো ফসল হচ্ছে না। এতে কৃষক, ক্ষেতমজুর ও মৎস্যজীবীদের প্রায় ১০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।

এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সমাবেশে ১১ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: ভাতুড়িয়া পূর্বপাড়ায় নদীর ব্রিজের উত্তর পাশে মাটি ভরাট করে তৈরি করা প্লট বিক্রি বন্ধ করে দখলকারীদের উচ্ছেদ করা। সিএস রেকর্ড অনুযায়ী নদীর সীমানা নির্ধারণ করে পিলার স্থাপন করা। ধান পরিবহনের জন্য নদীর উভয় পাশে রাস্তা নির্মাণ। জিয়া খালসহ ত্রিকিন নালা, সিক্বের নালা ও হরের নালা পুনঃখনন করা। পরিবেশগত ক্ষতির হিসাব করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া।

সমাবেশ শেষে বাপা’র কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা যশোরের জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারা জেলা প্রশাসককে মুক্তেশ্বরী দখল ও বিল হরিণার জলাবদ্ধতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানান।

জেলা প্রশাসক আশ্বাস দেন, নদী দখল তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরপরই দখলদারদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে। বাপা’র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির জানান, তারা দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন।