যবিপ্রবি থেকে রোগমুক্ত জারবেরা চারা পেলেন গদখালির ফুল চাষীরা

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) থেকে উৎপাদিত রোগমুক্ত জারবেরা ফুলের চারা বিতরণ করা হয়েছে যশোরের গদখালির বাণিজ্যিক ফুল চাষীদের মাঝে।

মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে ল্যাবরেটরি অফ ফাংশনাল জিনোমিক্স অ্যান্ড প্রোটিওমিক্স, জিইবিটি উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল মজিদ বলেন, ‘বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ফুলের বাগান হলো গদখালী। দেশের ফুলের চাহিদার একটি বড় অংশ এখান থেকেই পূরণ হয়। তবে এই সম্ভাবনাময় খাতটি নানা সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতায় জর্জরিত।’ তিনি ফুলচাষীসহ সবাইকে এই প্রতিকূলতা কাটিয়েউঠতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে গবেষণাগার পর্যাপ্ত থাকলেও দক্ষ ও মানসম্মত গবেষকের অভাব রয়েছে। তাই শিক্ষার্থীদের ভালো ও দক্ষ গবেষক হওয়ার জন্য সর্বদা চেষ্টা করতে হবে।’

উপাচার্য আরও বলেন, ‘আমাদের সবাইকে মাটি ও মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। এদেশের উন্নয়নে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।’

শুধু জারবেরা নয়, বরং অন্যান্য ফুলের উৎপাদন ও গুণগত মান নিয়েও গবেষণার জন্য যবিপ্রবি গবেষকদের উৎসাহিত করেন। পাশাপাশি, ফুলচাষীদের সার্বিক সহযোগিতার জন্য গদখালীতে একটি ল্যাব স্থাপনের আগ্রহ প্রকাশ করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যবিপ্রবি ট্রেজারার অধ্যাপক ড. হোসেন আল মামুন জারবেরা ফুলের ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি জানান, জারবেরা ফুল মূলত দক্ষিণ আফ্রিকার স্থানীয় এবং জার্মান উদ্ভিদবিজ্ঞানী ট্রাগোট জরবেরের নামে এর নামকরণ করা হয়। ১৮৮৯ সালে এর প্রথম বৈজ্ঞানিক বর্ণনা তৈরি হয়।

অনুষ্ঠানে যশোর ফুল উৎপাদক ও বিপণন সমবায় সমিতি লি. (জেএফএস)-এর সভাপতি মো. আব্দুর রহিম বলেন, ১৯৮২ সাল থেকে গদখালীতে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষ শুরু হয়। ২০০৬ সাল থেকে আধুনিক পদ্ধতিতে জারবেরা চাষ শুরু হলেও, এর চারা পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে আমদানি করতে হয়, যা ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ।

জেএফএস-এর সাধারণ সম্পাদক মীর ফারুক আহম্মদ যবিপ্রবির উৎপাদিত চারার গুণগত মানের প্রশংসা করেন এবং বলেন, এই চারা স্বল্পমূল্যে ও সময়মতো পেলে ফুল চাষে ভোগান্তি অনেক কমবে।

জারবেরা গবেষণা প্রকল্পের পরিচালক, জিইবিটি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রউফ সরকার জানান, যবিপ্রবি এই গবেষণার মাধ্যমে ফুলচাষীদের চাহিদা অনুযায়ী চারা উৎপাদন করে তাদের বাণিজ্যিকভাবে সহায়তা করতে চায়।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন যবিপ্রবি জীববিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. সিরাজুল ইসলাম, জিইবিটি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল হাসান, জেএফএস-এর সদস্যবৃন্দ এবং অন্যান্য ফুলচাষী ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ। ল্যাবরেটরি অফ ফাংশনাল জিনোমিক্স অ্যান্ড প্রোটিওমিক্স প্রকল্পের সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক ড. শেখ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জিইবিটি বিভাগের এম.ফিল শিক্ষার্থী নাসরিন আক্তার।