খাদ্যপণ্যের অস্বাভাবিক দামে নিম্ন ও মধ্যবিত্তের দুর্বিষহ জীবন

0

শেখ আব্দুল্লাহ হুসাইন ॥ বর্তমানে বাজারে খাদ্যপণ্যের অস্বাভাবিক দামে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। চলতি মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হওয়া সত্ত্বেও বাজারে চালের দাম কমেনি। অস্বাভাবিক বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি। খামারের মুরগির দামও অনেক বেশি। বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস।

ক্রেতাদের অভিমত অবিরাম বৃষ্টিকে অজুহাত হিসেবে দেখাতে চাচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। রোববার যশোর শহরের বড় বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। অথচ বাজারে চালের দাম কমার পরিবর্তে আরও বেড়েছে। আর চালের দাম বাড়ার পর আর কমেনি। রোববার বড় বাজার চালবাজারে বাংলামতি চাল মানভেদে প্রতি কেজি ৮২-৮৬ টাকা, মিনিকেট ৬২-৭০ টাকা, ব্রি-৬৩ চাল ৬৮-৭০ টাকা, ব্রি-৪৯ চাল ৫ টাকা, ব্রি-২৮ চাল ৫৮-৬০ টাকা, কাজললতা ৬৬ টাকা, স্বর্ণা ৫৪-৫৫ টাকা ও হীরা চাল ৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। চালের দাম বাড়ার পেছনে কর্পোরেট সিন্ডিকেটকেই দায়ী করছেন ভোক্তারা।

বৃষ্টির অজুহাতে বাজারে সবজি বিক্রি হচ্ছে অস্বাভাবিক দামে। ৮০ টাকা কেজির নিচে মানসম্মত সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। রোববার বড় বাজারে ভালোমানের টমেটো প্রতি কেজি ১৩০ টাকা, বেগুন ১২০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কাকরোল ৮০ টাকা, শসা ৮০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৮০ টাকা, ওল ৮০ টাকা, কচুরলতি ৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। তাছাড়া দেশি পেঁয়াজের দাম ৭৫ টাকায় ওঠার পর আর কমেনি।

বড় বাজারে কাঁচামালের আড়ত ‘মনিরামপুর ভাণ্ডার’-এর অন্যতম স্বত্বাধিকারী মো. আলাউদ্দিন জানান, যশোরের নিচু এলাকা বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। বাজারে যা কিছু সবজি আসছে তা উঁচু জমির ফসল।
খামারের মুরগিও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। রোববার বড় বাজারে খামারের লেয়ার মুরগির কেজি ৩৩০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩০০ টাকা, ব্রয়লার ১৮০ টাকা ও দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। বিক্রেতা আবুল হাশেম জানান,চাহিদার তুলনায় বাজারে মুরগির সরবরাহ কম হওয়ায় দাম বেড়েছে।

এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে বড় বাজার কাঠেরপুলে গরুর মাংস শহরের অন্যান্য এলাকা থেকে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। রোববারও এখানে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

ক্রেতা নিম্নআয়ের বেসরকারি চাকরিজীবী হায়দার আলী জানান, জরুরি পণ্যের দাম একসঙ্গে বেড়ে যাওয়ায় তাদের মতো সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়েছেন। তিনি এসব পণ্যের দাম বৃদ্ধির পেছনে কর্পোরেট সিন্ডিকেট ও এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি বলে মনে করেন। আর এর জন্য তিনি বাজার তদারকির গাফিলতেকেই দায়ী করেন।