যশোর সড়ক সংস্কারের দাবিতে পৌরসভায় অবস্থান

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলাচলের অযোগ্য শাহ আবদুল করিম সড়কের সংস্কারের দাবিতে অবশেষে রাজপথে নেমেছে যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজের শিক্ষার্থীরা। বুধবার ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ এর ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ এবং পৌরসভা ঘেরাও কর্মসূচির মাধ্যমে তারা নিজেদের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ প্রকাশ করে। জনপ্রতিনিধিদের বারবার আশ্বাসে ক্লান্ত শিক্ষার্থীরা এবার ‘আর আশ্বাস নয়, কার্যকর উদ্যোগ’ চেয়ে স্লোগান দেয়।

বেলা সাড়ে ১১টায় এমএম কলেজের সামনে থেকে শুরু হওয়া এই আন্দোলন দুপুরের মধ্যেই পৌরসভা প্রাঙ্গণে পৌঁছে যায়। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান দিতে থাকে, যা তাদের হতাশা ও দুর্ভোগের গভীরতা বোঝাতে যথেষ্ট ছিল। তাদের প্রধান অভিযোগ, বর্ষা এলেই কলেজের সামনের এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটিসহ আশপাশের রাস্তাগুলো পুরোপুরি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। সামান্য বৃষ্টিতেও বিশাল জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়, যা কলেজগামী প্রায় ৩৮ হাজার শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং খড়কী এলাকার হাজার হাজার মানুষকে সীমাহীন দুর্ভোগে ফেলে। শুষ্ক মৌসুমেও বিটুমিন উঠে বড় বড় গর্তে ভরে যায় সড়কটি।

‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ যশোরের মুখপাত্র ফাহিম ফাত্তাহ বলেন, ‘আমরা শুধু আশ্বাস পেয়েছি, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। সড়কের বেহাল দশা এতটাই প্রকট যে, এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করার জন্য আজ আমরা বাধ্য হয়েছি রাস্তায় নামতে।’ স্থানীয় বাসিন্দা জাকির হোসেন পলাশও একই সুরে কথা বলেন, ‘জনপ্রতিনিধিদের আন্তরিকতার অভাব স্পষ্ট। সামান্য বৃষ্টিতেও পানি জমে থাকে, যা নামতে দু-তিন দিনও লেগে যায়। পৌরসভার কাছে বারবার বলেও কোনো ফল মেলেনি।’

শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে যশোর পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মোরাদ আলীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, মঙ্গলবারই এমএম কলেজের সামনের সড়ক ও নালার সংস্কারের জন্য সাড়ে ৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। দ্রুত দরপত্র আহ্বান করে কাজ শুরু হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি। এই আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা সাময়িকভাবে তাদের কর্মসূচি স্থগিত করে।

তবে, কেবল শাহ আবদুল করিম সড়কই নয়, যশোর পৌরসভার অন্তত ৮০টি সড়ক বর্তমানে বেহাল অবস্থায় রয়েছে। বছরের পর বছর ধরে এসব সড়ক সংস্কারের দাবিতে স্থানীয় বাসিন্দারা বিভিন্ন সময় বিক্ষোভ, মিছিল ও স্মারকলিপি দিলেও পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হয়নি।