যশোরে তিন ঘণ্টার বৃষ্টির স্বস্তিতে সড়কে জলাবদ্ধতার ভোগান্তি

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গতকাল সারাদিন অস্বস্তিকর গরমের পর শেষ বিকেল থেকে শুরু হওয়া টানা তিন ঘণ্টার বৃষ্টি জনজীবনে স্বস্তি আসলেও সড়কের জলাবদ্ধতায় ভোগান্তির শিকার হতে হয় যশোর নগরবাসীর। গতকাল বিকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত যশোরে ২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়।

গতকাল সকাল থেকেই যশোরে ছিল অসহনীয় তাপমাত্রা। গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল, দুপুরের দিকে ভোগান্তি পৌঁছেছিল চরমে। এরই মধ্যে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পরপরই শুরু হওয়া বৃষ্টি শহরের মানুষকে কিছুটা শান্তি এনে দেয়। অনেকে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বলেন, ‘এমন একটা শান্তিময় বৃষ্টির খুবই দরকার ছিলো।’

খুলনা আবহাওয়া অফিস জানায়, গতকাল বিকেল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত যশোরে ২১ মিলিমিটার বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হয়েছে।

তবে এই স্বস্তির মুহূর্ত স্থায়ী হয়নি বেশিক্ষণ। তিন ঘণ্টা টানা বর্ষণে শহরের প্রধান কয়েকটি সড়ক পানিতে তলিয়ে যায়। ভোলাট্যাংক সড়কের ফায়ার ব্রিগেডের সামনে, পাশে গুরুদাস বাবু লেন, নিরালাপট্টি, রেল রোডের টিবি ক্লিনিক মোড় এলাকা, শাহ আব্দুল করিম রোড, খড়কি বামনপাড়া, স্টেডিয়াম পাড়া, গুরুদাস বাবু লেন, সার্কিট হাউসপাড়া, বটতলা মসজিদ এলাকাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় রাস্তাঘাটে পানি জমে রিকশা ও মোটরসাইকেল চলাচল ব্যাহত হয়, কিছু যানবাহন বন্ধ হয়ে পড়ে। পথচারীদের কাদা-পানির মধ্য দিয়ে হেঁটে যেতে হয়, আর অনেক দোকানপাটের সামনে পানি ঢুকে পড়ায় ব্যবসায়ীরাও ক্ষতির মুখে পড়েন।

স্টেডিয়ামপাড়ার বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘যশোর পৌরসভার ড্রেনেজ ব্যবস্থা দীর্ঘদিন ধরেই অব্যবস্থাপনার শিকার। অল্প সময়ের বৃষ্টিতেই যদি শহর এমনভাবে জলমগ্ন হয়ে পড়ে, তাহলে বর্ষা মৌসুমে কী হবে, তা ভেবেই আমরা শঙ্কিত।’ তিনি আরও বলেন, প্রতিবছর একই দৃশ্য দেখা গেলেও কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয় না। যদিও গত ৫ আগস্টের পর প্রশাসক নিয়োগের পর যশোর পৌরসভার ড্রেনেজ পরিষ্কার করে বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার ভোগান্তি নিরসনের উদ্যোগ নেয়। শহরের গুরুত্বপূর্ণ ড্রেনগুলোতে দীর্ঘ দিনের জমে থাকা ময়লা অপসারণ করা হয়েছে। কিন্তু যশোর শহরের পানি বেরুনোর অন্যতম ড্রেন কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল মসজিদের পেছনের ড্রেন ও খাল পরিস্কারের পথটি এখন বন্ধ হয়ে আছে।

গতকাল রাত ৮টায় যশোর বিমান বাহিনী নিয়ন্ত্রিত আবহাওয়া অফিসের একজন কর্মকর্তা জানান, বৃষ্টি চলমান থাকায় তৎক্ষণাৎ এর পরিমাণ বলা সম্ভব হচ্ছে না। খুলনা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা আমিনুল ইসলামও একই কথা বলেন।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাত হতে পারে এবং যশোর অঞ্চলেও মাঝারি ধরনের বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, যা গরম কমাতে সহায়ক হবে। তবে শহরবাসী আশঙ্কা করছেন, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নতি না হলে অল্প বৃষ্টিতেও আবারও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হতে পারে।