সংবাদ প্রকাশে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান মোহাম্মদ আবদুল্লাহর

সাংবাদিক ও সন্তানদের ভেতর চেক বিতরণ

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সংবাদ প্রকাশে এখন আর আওয়ামী ফ্যাসিস্ট আমলের মতো সেন্সরশিপ আরোপ করা হয় না উল্লেখ করে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেছেন, জুলাই বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকেরা যে স্বাধীনতা পেয়েছি তার সঙ্গে দায়িত্বশীলতার বিষয়টি অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হচ্ছে। এটা করা যাবে না।

সম্প্রতি দেশের কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানকে বিতর্কিত করা হচ্ছে উল্লেখ কবে তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতা- সার্বভৌমত্বের জন্যে হুমকি হয় এমন কোন সংবাদ প্রকাশ করা যাবে না।

বহুল আলোচিত সংবাদ মাধ্যম সংস্কার প্রস্তাব সম্পর্কে তিনি বলেন, বেশির ভাগ সুপারিশ ইতিবাচক হলেও কিছু প্রস্তাবনা বাস্তবতার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। সাংবাদিকের প্রারম্ভিক বেতন প্রথম শ্রেণির বিসিএস কর্মকর্তার সমান প্রস্তাব করা হলেও তা নিশ্চিত করার ম্যাকানিজম কী হবে তা রিপোর্টে স্পষ্ট নয়। ‘এক মালিকের এক মিডিয়া’ প্রস্তাব বাস্তবায়নও কঠিন হবে।

রোববার যশোর সার্কিট হাউস মিলনায়তনে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে অসুস্থ ও অসচ্ছল সাংবাদিকদের মধ্যে কল্যাণ অনুদান এবং সাংবাদিকদের সন্তানদের মধ্যে বৃত্তির চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুহাম্মদ আবদুল্লাহ এসব কথা বলেন।

যশোরের জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলার ৫৭ জন সাংবাদিক ও ৭৪ সাংবাদিকের মেধাবী সন্তানের মধ্যে চেক বিতরণ করা হয়।

সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সভাপতি আকরামুজ্জামানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন যশোরের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা রেজাউল করিম, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, সাবেক সম্পাদক আহসান কবীর, বিএফইউজের সহকারী মহাসচিব এহতেশামুল হক শাওন, সাবেক সহসভাপতি রাশিদুল ইসলাম, সাবেক সহকারী মহাসচিব নূর ইসলাম প্রমুখ।

মুহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, সাংবাদিকদের কল্যাণে ট্রাস্ট যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে তা অনেকেরই পছন্দ হচ্ছে না। ফলে ট্রাস্টের কার্যক্রম ব্যাহত করার ষড়যন্ত্র চলছে। সাংবাদিক সমাজ তা বরদাশত করবে না।

তিনি বলেন, সাংবাদিকেরা অন্যান্য পেশাজীবীদের মতো নন। সাংবাদিকতা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ও অনিশ্চয়তার পেশা। এ পেশার মানুষেরা দেশের গণতন্ত্র, জনগণের কল্যাণ ও মানবাধিকারের জন্যে কাজ করে। পেশাদার সাংবাদিকেরা দেশ ও মানুষের স্বার্থে নিজেকে উজাড় করে দেন, জীবনের ঝুঁকি নেন। সে কারণে সাংবাদিকদের দুঃসময়ে তাদের পাশে দাঁড়ানো রাষ্ট্রের দায়িত্ব।

তিনি বলেন, বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট অত্যন্ত স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা ও সেবার মানসিকতা নিয়ে কাজ করছে। আট মাসে অসুস্থ, অসচ্ছল সহস্রাধিক সাংবাদিকের পাশে দাঁড়িয়েছে ট্রাস্ট। এছাড়া পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে দেড় হাজার সাংবাদিক পরিবারের কাছে ইফতার ও ঈদ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

পেশাগত উৎকর্ষ সাধনে সাংবাদিকদের জন্যে ফেলোশিপ চালু করা হচ্ছে। প্রবীণ সাংবাদিকদের অবসরকালীন মাসিক ভাতার আওতায় আনার কাজ চলছে।

অনুষ্ঠানে যশোরের জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম বলেন, ফ্যাসিবাদ কায়েমে অন্য অনেক পেশাজীবীর মতো সাংবাদিকদেরও ভূমিকা ছিল, যেটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা সেই সময়ে আর ফিরে যেতে চাই না।

আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ যেন গোলামির না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। তিনি বলেন, একমুখি তথ্য নির্ভর সংবাদ প্রচার করা উচিৎ নয়।