অবশেষে ইট বিছিয়ে মহাসড়কের ভোগান্তি নিরসনের উদ্যোগ

0

নজরুল ইসলাম মল্লিক, অভয়নগর (যশোর) ॥ অবশেষে ইট বিছিয়ে হেরিংবনে যশোর-খুলনা মহাসড়কের ভোগান্তি নিরসনে কাজ শুরু করেছে সড়ক বিভাগ। ২০১৮ সালে পুননির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার সাথে সাথে এ মহাসড়কের ৩৮ কিলোমিটার জুড়ে পিচ ও পাথর উঠে চলাচলের বিঘ্ন শুরু হয়।

এরপর থেকে শ’ শ’ কোটি টাকা শুধু খরচই করতে থাকে সড়ক বিভাগ। কিন্তু বশে আনা যায়নি অবনতিশীল গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কটির। শেষ পর্যন্ত আপাতত সমাধান হিসেবে সড়কের চলাচল অনুপযোগী স্থানগুলোতে হেরিংবন করার কাজ শুরু হল।

যশোর-খুলনা মহাসড়কের ৩৮ কিলোমিটার উন্নয়নে ৩২১ কোটি টাকা বরাদ্দে ২০১৮ সালে শুরু হয় উন্নয়ন কাজ। ২০২২ সালের জুন মাসে কাজ শেষ হয়। কিন্তু এ সড়কে নির্মাণ চলাকালেই ৮ কিলোমিটার সড়ক ফুলেফেপে ওঠে। এরপর ব্যয় বাড়িয়ে ৫০ কোটি টাকা খরচে চার কিলোমিটার সড়ক ঢালাই করা হয়। এভাবে পুনর্নির্মাণের পর সাত দফা সংস্কার করা হলেও মেলেনি সমাধান। এখন আসন্ন ঈদের আগে সড়কটিতে হেরিংবন করার জন্য দরপত্র আহ্বান করে সড়ক বিভাগ। এছাড়া আরসিসি বা ঢালাই সড়ক নির্মাণের জন্য সরকারের কাছে আরও অর্থ বরাদ্দ চেয়েছে দফতরটি।

যশোর-খুলনা মহাসড়কে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়কের যশোরের নওয়াপাড়া থেকে প্রায় ৩৭ কিলোমিটার অংশে বিভিন্ন স্থানের বিটুমিন ও ইট-পাথর উঠে অসংখ্য ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। তৈরি হয়েছে ঢিবি। বর্তমানে মহাসড়কের ১০টি স্থানে ইট দিয়ে সলিং ও হেরিংবনের কাজ শুরু করেছে সড়ক বিভাগ।

দেশের অন্যতম ব্যবসায়ী মোকাম হিসেবে যশোরের নওয়াপাড়ার পরিচিত দেশব্যাপী। এখানে নৌ, সড়ক ও রেলপথ থাকায় ব্যবসায়ী সমৃদ্ধ শহর হিসেবে গড়ে উঠেছে। আমদানি করা সার,কয়লা, গম, ভুট্টা ও চাল এখান থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। সরবরাহ করা পণ্য এই সড়ক দিয়ে পরিবহন করা হয়। সড়কের বেহাল দশার কারণে পরিবহন খরচ অনেক বেড়ে যায়। যশোর-খুলনা মহাসড়কের নওয়াপাড়া থেকে যশোরের চাঁচড়া পর্যন্ত ৩৭ কিলোমিটার সড়ক জুড়ে অসংখ্য ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এই সড়কে প্রতিদিন ঘটছে ছোটবড় দুর্ঘটনা। একটু বৃষ্টি হলেই গর্তে পানি জমে থাকে। কিছু কিছু গর্ত এত গভীর যার মধ্যে দুই ও তিন চাকার যান উল্টে যায়।

গাড়ির চালক ও যাত্রীরা বলছেন, খানাখন্দ ও ছোট-বড় গর্তের কারণে প্রতিনিয়ত সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের। বিটুমিন না দিয়ে ইট দিয়ে সড়কের সংস্কার কাজ করা হচ্ছে।

যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া সম্প্রতি জানিয়েছিলেন, যশোর-খুলনা মহাসড়কের ৩৮ কিলোমিটারের মধ্যে ১৬ কিলোমিটারের অবস্থা খারাপ। এ জন্য তিনটি দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭ কিলোমিটার রিজিট পেমেন্ট ও ৩ কিলোমিটার হেরিংবন। বাকি ৬ কিলোমিটারের জন্য আমরা আরও চাহিদা পাঠাবো মন্ত্রণালয়ে।

তিনি আরও জানান, বরাদ্দ না থাকায় এইভাবে সংস্কার করতে হচ্ছে। বরাদ্দ পেলে আরসিসি ঢালাই ও বিটুমিনের কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে।