মনিরামপুরে ভবদহের পানির চাপে বেড়িবাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে ১২শ বিঘার বোরো ক্ষেত

0

মজনুর রহমান,মনিরামপুর(যশোর)॥যশোরের মনিরামপুরে ভবদহের পানির চাপে দুর্বাডাঙ্গা ইউনিয়নের হরিনা বিলের খালের বেড়িবাঁধটি ভেঙে তলিয়ে গেছে ১২শ বিঘার বোরো ক্ষেত।

এছাড়া পাশের একটি ঘের তলিয়ে ভেসে গেছে প্রায় কোটি টাকার মাছ। সব মিলিয়ে ক্ষতি হয়েছে পাঁচ কোটি টাকার। এ ঘটনা ঘটে শনিবার ভোরে।

এদিকে বোরো ধানের আবাদ রক্ষা করতে মাইকিং করে এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশ ও বালির বস্তা দিয়ে রোববার সকাল থেকে দ্বিতীয় দফায় শুরু করেছে বাঁধ মেরামতের কাজ।

এলাকাবাসী জানায়, মনিরামপুর উপজেলার ভবদহ সংলগ্ন দুর্বাডাঙ্গা ইউনিয়নের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত একটি খাল। ওই খাল দিয়ে এলাকার ২৭ বিলের পানি গিয়ে ভবদহ ডায়ের খালে পড়ে। খালের দুই পাশ উঁচু করে বেড়িবাঁধ দেওয়া রয়েছে। খালের বেড়িবাঁধের পূর্ব পাশে স্থানীয় বিমল কুমার মন্ডল নামে এক ব্যক্তি এলাকার কয়েকশ কৃষকের কাছ থেকে ১২শ বিঘা জমি লিজ নিয়ে ঘেরের ব্যবসা করে আসছে। চুক্তি অনুসারে ওই ঘেরে মাছ চাষের পাশাপাশি শুষ্ক মৌসুমে পানি নিষ্কাশন করে কয়েকশ কৃষক(প্রকৃত জমির মালিক) বোরো আবাদ করে আসছে।

কিন্তু ২৭ বিলের পানির চাপে শনিবার ভোরে খালের বেড়িবাঁধ ভেঙে ১২শ বিঘার ঘেরের মধ্যে রোপণ করা বোরো ধান তলিয়ে যায়। এতে ভেসে গেছে পাশের একটি বড় ঘেরের প্রায় কোটি টাকার মাছ। এরপর এলাকাবাসী সকাল থেকে সম্মিলত প্রচেষ্টায় বাঁশ ও বালির বস্তা দিয়ে বাঁধ মেরামতের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে মাইকিং করে এলাকাবাসী রোববার সকাল থেকে দ্বিতীয় দফায় সম্মিলিত চেষ্টায় স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশ ও বালির বস্তা দিয়ে আবারও বাঁধটি রক্ষার চেষ্টায় নেমেছেন।

১২শ বিঘার ঘের মালিক বিমল কুমার মন্ডল জানান, তার ঘেরের মধ্যে (ছোট ক্যানেলে) থাকা প্রায় কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। এছাড়া কৃষকদের রোপণ করা বোরো ধান ক্ষেত তলিয়ে গেছে। হঠাৎ এ বাঁধ ভেঙে বোরো ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় এলাকার চাষিদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম হাতাশা।

দুর্বাডাঙ্গা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলতাফ হোসেন ও স্থানীয় ইউপি সদস্য দীপক কুমার রায় জানান, রোববার সকাল থেকে প্রায় হাজারো মানুষ ভেঙে যাওয়া স্থানের বাঁধ মেরামতের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে খবর পেয়ে রোববার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপজেলা কৃষি অফিসার মাহমুদা আকতার ও প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার সাইফুল ইসলাম।

কৃষি অফিসার জানান, পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকদের অন্তত চার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
অন্যদিকে প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার জানান, ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ মেরামত ও কৃষকদের তালিকা করে যথাসম্ভব সহযোগিতা করা হবে।

তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যনার্জী জানান, ১২শ বিঘার এ ঘেরের পানি নিষ্কাশন করায় পাশের খালের পানির চাপে ব্যক্তি মালিকানাধীন বেড়িবাঁধটি ভেঙে যেতে পারে।

উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিন্টুসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে জানান, ইতোমধ্যে দুর্বাডাঙ্গা ইউনিয়নসহ আশপাশের বিএনপির নেতাকর্মীরা স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ মেরামতের কাজে যোগ দিয়েছেন।