যশোরে মেহের আলীকে গুলি করার কথা স্বীকার সন্ত্রাসী কোকিলের

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভাড়াটিয়া খুনি কোকিল রিমান্ডে ডিবি পুলিশের কাছে যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের বাদিয়াটোলা গ্রামের বিএনপি সমর্থক মেহের আলী হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। মেহের আলীকে তিনিই গুলি করেছিলেন বলে ডিবি পুলিশকে জানিয়েছেন। তবে হত্যায় ব্যবহৃত পিস্তলের বিষয়ে ডিবি পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে কোকিল এবং রকি নামে আরেক সন্ত্রাসী রিমান্ডে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছে বলে জানা গেছে।
ডিবি পুলিশের এসআই মো. মফিজুল ইসলাম জানান, বিএনপি সমর্থক মেহের আলী হত্যা মামলা তদন্তকালে সাজ্জাদ হোসেন ও তারেক হোসেন নামে দুই জনকে তিনি আটক করলে তারা হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। এর মধ্যে সাজ্জাদ হোসেনের স্বীকারোক্তিতে হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চালানো হয়। এ সময় হত্যা মিশনে অংশ নেওয়া ভাড়াটিয়া খুনি কোকিলের শ্যালক রিয়াজ উদ্দিনকে পিস্তলের ৪ রাউন্ড গুলিসহ আটক করেন। এ সময় রিয়াজ হোসেনের কাছ থেকে জানা যায়, হত্যায় ব্যবহৃত পিস্তলটি তার ভগ্নিপতি কোকিলের কাছে রয়েছে। এর আগে তিনি কোকিল এবং রকি নামে আরেক সন্ত্রাসী আটক করে মেহের আলী হত্যা মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়। কিন্তু সেই সময় কোকিল জিজ্ঞাসাবাদে মেহের আলীকে হত্যার কথা স্বীকার করেননি। ফলে ডিবি পুলিশ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কিছুটা অন্ধকারের ভেতরে ছিলো। পরবর্তীতে সাজ্জাদ ও তারেককে আটক করা হলে তারাই স্বীকার করেন, হত্যা মিশনে তাদের সাথে ছিলেন কোকিল। একটি মোটরসাইকেলে কোকিল এবং সাজ্জাদ ছিলেন। অপর মোটরসাইকেলে ছিলেন তারেক। তারেকের দায়িত্ব ছিলো মেহের আলীর বাড়ি চিনিয়ে দেওয়া। অপর দুই জন ছিলেন ভাড়াটিয়া খুনি। এদের মধ্যে কোকিল গুলি করেন মেহের আলীকে। তিনি বলেন, গুলি উদ্ধারে ঘটনায় সাজ্জাদ, কোকিল, রিয়াজ, তারেক এবং পিস্তলের মালিক রকিকে আসামি করে অস্ত্র আইনে কোতয়ালি থানায় মামলা দায়েরের পর তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়েছিলেন। পরে আদালত ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বৃহস্পতিবার আদালতের আদেশে অস্ত্র আইনের মামলায় ওই ৫ আসামিকে রিমান্ডে নিয়েছেন। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে মেহের আলীকে নিজেই গুলি করেছিলেন বলে স্বীকার করেছেন ভাড়াটিয়া খুনি কোকিল। তবে হত্যায় ব্যবহৃত পিস্তলটি তার কাছে নেই বলে কোকিল দাবি করেছেন। এ সময় রকিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি ডিবি পুলিশকে জানিয়েছেন, মেহের আলীকে হত্যার পর সাজ্জাদ এবং কোকিল তার কাছে এসেছিলেন। কিন্তু কোকিল তার কাছে পিস্তল দেয়নি। এসআই মো. মফিজুল ইসলাম জানান, কোকিল এবং রকি অত্যন্ত ধূর্ত এবং শক্ত প্রকৃতির। তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন, মেহের আলীকে হত্যার পর ওইদিন রাতে কোকিল, সাজ্জাদ এবং রকি ভেকুটিয়া বাজারে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করেন। এরপর তারা সেখান থেকে চলে যান। তার ধারণা, হত্যায় ব্যবহৃত পিস্তলটি কোকিল অথবা রকির কাছে রয়েছে। পিস্তল না দিতে রিমান্ডে তারা বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছেন। তবে তিনি আশা করছেন, পিস্তলটি উদ্ধার করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, গত ৯ আগস্ট রাতে বাদিয়াটোলা গ্রামের বাসিন্দা বিএনপি সমর্থক মেহের আলীকে গুলি চালিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীর। এ ঘটনায় তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে হত্যায় জড়িত সাজ্জাদ এবং তারেককে ডিবি পুলিশ আটক করার পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ প্রকাশ পায়, মালয়েশিয়ায় অবস্থানকারী বাদিয়াটোলা গ্রামের শের আলী এবং তার ছেলে মেহেদী হাসান ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের দিয়ে মেহের আলীকে খুন করিয়েছেন