ভারতে ইলিশ রফতানির কারণে যশোরে সরবরাহ কম,দাম বেশি

0

শেখ আব্দুল্লাহ হুসাইন ।। ইলিশের মৌসুম শেষ হতে চললেও দাম মোটেও স্বাভাবিক হয়নি। আর মাত্র সাত দিন পরেই ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ২২ দিন ইলিশ ধরা ও কেনাবেচা বন্ধ হচ্ছে। ভালোমানের নদীর মিষ্টি পানির সুস্বাদু ইলিশ মাছ রফতানি হয়ে চলে যাচ্ছে ভারতে। বিক্রেতা ও ক্রেতাদের অভিমত এ সময় ইলিশ রফতানি না হলে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকতো।

যশোরের বড় বাজার মাছবাজারে শুক্রবার খুচরা পর্যায়ে ১ কেজি ২শ/২৫০ গ্রাম ওজনের নদীর মিষ্টি পানির সুস্বাদু ইলিশ মাছ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ১৮শ টাকা, ৯শ গ্রাম ওজনের কেজি ১৫শ টাকা, ৭শ/৮শ গ্রাম ওজনের কেজি ১৪শ টাকা, ৫শ/৬শ গ্রাম ওজনের কেজি ১২শ টাকা, ৩টায় কেজি ৯শ টাকা, ৪টায় কেজি ৬শ টাকা। আর সাগরের নোনা পানির কম স্বাদযুক্ত ১ কেজি ইলিশ মাছ বিক্রি হয়েছে ১৬শ টাকা, ৩টায় কেজি ৭শ টাকা ও ৪টায় কেজি ৫শ/৫৫০ টাকা দরে। বিক্রেতা এরশাদ আলী জানান, বাজারে ইলিশের আমদানি কিছুটা বাড়লেও তার অধিকাংশই ছোট মাছ। সাধারণ মানুষ তুলনামূলক কম দামে পেয়ে ছোট ইলিশ কিনছেন বেশি।

স্থানীয় আড়তদার আলহাজ পিয়ার মুহাম্মদ জানান, ভারতে ইলিশ রফতানি হওয়ার কারণে যশোরে ভালোমানের মাছের সরবরাহ কমেছে। এ কারণে ভরা মৌসুমেও ইলিশের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে রয়ে গেছে। তিনি শুক্রবার নদীর ১ কেজি থেকে ১ কেজি ১শ/২শ গ্রাম ওজনের ইলিশের মণ পাইকারি ৭৫/৮৫ হাজার টাকা, ৯শ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৭৪/৭৫ হাজার টাকা, ৭শ/৮শ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৬২/৬৩ হাজার টাকা ও ৪শ/৫শ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১২/১২৫০০ টাকায় বিক্রি করেছেন।

শুক্রবার ইলিশ কিনতে আসা ক্রেতা মো. সিরাজ এ প্রতিবেদককে জানান, ভরা মৌসুমেও ভালোমানের ইলিশ জুটছে না। যা মিলছে তার দাম আকাশছোঁয়া। ওই মাছগুলো ভারতে রফতানি হচ্ছে। আর মাত্র সাত দিন বাজারে ইলিশ বিক্রি হবে। এর পরে আসবে ডিম ছাড়া ইলিশ। যাতে তেমন কোনো স্বাদ পাওয়া যাবে না। ৩টা সাগরের ইলিশ ৭শ টাকায় কিনে তিনি বলেন, আমাদের এই ছোট সাইজের ইলিশেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে।

যশোরের বড় বাজার মাছবাজার আড়তে বরিশাল, ভোলা ও বরগুনা জেলার ব্যবসায়ীরা ইলিশ মাছ বিক্রি করতে পাঠান। গত বৃহস্পতিবার মোবাইল ফোনে কথা হয় বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ এবং পাইকারি মৎস্য বিক্রয় কেন্দ্রের আড়তদার বাবুরাম কর্মকারের সাথে। তিনি দৈনিক লোকসমাজকে জানান, বরগুনার পাথরঘাটা হচ্ছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র। এখানে প্রায় ৩শ আড়তদার রয়েছেন। এখান থেকে ভারতে পাঠানোর জন্য রফতানিকারকরা বেছে বেছে ভালো মানের নদীর সুস্বাদু ৭শ গ্রাম থেকে ১ কেজি ও ১ কেজির বেশি ওজনের ইলিশ কিনছেন। তারা এদিন ঘাট থেকে ১ কেজি ও ১ কেজির ওপরের ইলিশ কিনেছেন ১৭শ ৫০ টাকা ও ৭শ গ্রাম ওজনের ইলিশ কিনেছেন ১৩শ ৭৫ টাকা দরে।

এদিকে বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসীন দৈনিক লোকসমাজকে জানান, প্রধান মৌসুমে ইলিশের নিরাপদ প্রজনন নিশ্চিতে আগামী সপ্তাহ অর্থাৎ ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন সরকারি নির্দেশনা অনুয়ায়ী সারা দেশে ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহন, মজুদ,বাজারজাতকরণ, কেনাবেচা ও বিনিময় নিষিদ্ধ করা হয়েছে।