খালেদা জিয়া শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও বিদ্বেষের শিকার

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার জন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে বন্দি করা হয়েছে তা আজ দেশ-বিদেশে সর্বজনবিদিত বলে মন্তব্য করেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) নয়া পল্টনে যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার রিপোর্টের প্রতিবেদন তুলে ধরে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, খালেদা জিয়া শেখ হাসিনার রাজনীতির প্রতিহিংসা ও বিদ্বেষের শিকার। বেগম জিয়ার সাজা নিয়ে দেশবাসী এতদিন যা মনে করেছে, মার্কিন প্রতিবেদনেও সেটি উঠে এসেছে।
‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের গুম, খুন, গুপ্তহত্যা, কারানির্যাতনসহ ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘন বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, রিপোর্টে মি. গিলক্রিষ্ট বলেছেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে—অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনে নাগরিকদের অধিকার হরণ করা হয়েছে। বিরোধী নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশে বাধা প্রদানসহ বিভিন্ন অবনতিশীল মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে।
রিজভী বলেন, শেখ হাসিনার ইচ্ছায় এদেশে আইনের প্রয়োগ হয়। প্রচলিত ফৌজদারি, দেওয়ানিসহ সকল আইন শেখ হাসিনার সংস্করণ অনুযায়ী প্রয়োগ করতে হয়। ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচনের পর বাংলাদেশের একচ্ছত্র অধিপতি হয়ে ওঠেন শেখ হাসিনা। খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দেশের বিরোধী দলের প্রধান নেতারাসহ লাখো নেতাকর্মীর ওপর নেমে আসা জেল-জুলুম, অত্যাচার আর অবিচারের প্রকটতা দেখে বিশ্ব সম্প্রদায় বিচলিত হলেও তাতে প্রধানমন্ত্রীর কোনো যায় আসে না। তার সকল অপকর্মের দায় নিয়েছে পার্শ্ববর্তী দেশ।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ডামি প্রধানমন্ত্রীর দ্বারা আবারও প্রমাণিত হলো ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা পেলে বিরোধী শক্তিসহ গণতন্ত্র স্বীকৃত নাগরিক স্বাধীনতাকে নিশ্চিহ্ন করা যায়। আর আইন-আদালত প্রবল প্রতাপশালী একনায়কের ‘নির্দেশপত্র’ মোতাবেক চলে, যেমনভাবে শেখ হাসিনা ক্ষমতাসীন হওয়ার পর নিজের মামলাগুলোকে নিরুদ্দেশ করেছেন। বিরোধী দলকে দমনের বিপুল প্রচেষ্টা সার্থক করতে গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও ধারাবাহিক খুনের এক ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের বাতাবরণ তৈরি করা হয়। সুষ্ঠু ভোট, নির্বাচন, ভোটাধিকার কবরে শায়িত থাকে।
রিজভী বলেন, বর্তমান ডামি সরকারের ‘অভিন্নহৃদয় বড় বন্ধু’ হচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত। মনে হচ্ছে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের চাবিটা শেখ হাসিনা তাদের দিয়ে দিয়েছেন। হিউম্যানস্প্রিট শূন্য বিএসএফের রক্তপিপাসু ভূমিকায় সারাজাতি ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উৎকণ্ঠিত। গতকাল সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাধীন কসবা উপজেলার পুটিয়া সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুলিতে হাসান মিয়া নামে এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছে। সীমান্তে রক্তের দাগ যেন শুকাচ্ছেই না। কিন্তু ক্ষমতার নেশায় আচ্ছন্ন দখলদার সরকার বিএসএফের বর্গীর ভূমিকার বিরুদ্ধে টুঁ শব্দ করতে পারেনি। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফ কতৃর্ক নিহত হাসান মিয়াসহ প্রতিনিয়ত সকল হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, আবদুস সালাম, চেয়াপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।