গরিবের ছয় হাজার বস্তা চাল নিয়ে পশুর নদীতে বাল্কহেড ডুবি

0

বাগেরহাট সংবাদদাতা॥ গরিবদের ৬ হাজার বস্তা চাল নিয়ে ডুবল বাল্কহেড ।পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে গরিব- অসহায়দের জন্যে আনা ছয় হাজার বস্তা সরকারি চাল নিয়ে ‘এম ভি সাফিয়া’ নামে একটি বাল্কহেড জাহাজ ডুবির ঘটনা ঘটছে।পশুর নদীতে বাল্কহেড ‘এম ভি সাফিয়া’ ডুবে যায়।
রোববার দুপুরের পর মোংলা বন্দরের পশুর নদীর ত্রি-মোহনায় এসে বাল্কহেডটি পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা ‘এমভি শাহাজাদা-৬’ নামের অপর একটি লাইটার জাহাজ পেছন থেকে ধাক্কা দিলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। তবে এ সময় কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। জাহাজে থাকা ৫ নাবিককে অক্ষত অবস্থায় জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে ধাক্কা দেয়ার অপরাধে ‘এভি শাহাজাদা-৬’ লাইটার জাহাজটিকে সন্ধ্যায় আটক করেছে নৌ পুলিশ।
মোংলা নৌ পুলিশের অফিস ইনচার্জ এসআই সৈয়দ ফখরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নৌপুলিশের অফিস ইনচার্জ সৈয়দ ফকরুল ইসলাম বলেন, ঈদ উপলক্ষ্যে গরিব- অসহায়দের জন্যে রোববার সকালে খুলনার সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে ছয় হাজার বস্তায় ১৭৫ মেট্রিক টন সরকারি চাল নিয়ে মোংলা খাদ্য গুদামের উদ্দেশে ‘ এমভি সাফিয়া’ নামে চাল বোঝাই একটি বাল্কহেড জাহাজ ছেড়ে আসে।
এদিন দুপুরের পর বাল্কহেডটি মোংলা বন্দরের পশুর নদীর ত্রি-মোহনায় এসে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা লাইটার জাহাজ এমভি শাহাজাদা-৬ পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে সরকারি চাল নিয়ে ডুবে যায় বাল্কহেড জাহাজ ‘এম ভি সাফিয়া’। তবে এসময় বাল্কহেড জাহাজে থাকা পাঁচজন নাবিক দ্রুত সাঁতরিয়ে পাড়ে উঠলে প্রাণে বেঁচে যান তারা।এ ঘটনায় এভি শাহাজাদা-৬ লাইটার জাহাজটিকে বঙ্গবন্ধু মোংলা ঘষিয়াখালী নৌ ক্যানেল থেকে সন্ধ্যার পরে আটক করা হয়েছে বলেও জানান সৈয়দ ফখরুল ইসলাম।
সোমবার সকাল থেকে সরকারি চাল উঠানো ও ডুবন্ত বাল্কহেডটি উদ্ধার কাজ শুরু করা হয়েছে বলে জানান নৌপুলিশের এ কর্মকর্তা।
এদিকে বাগেরহাটের মোংলা পশুর চ্যানেলে ডুবে যাওয়া বাল্কহেড এম ভি সাফিয়া থেকে চাল উদ্ধার শুরু হয়েছে। সোমবার সকালে ৭ টা ট্রলার থেকে ৭ জন ডুবুরি ও ৫০ জন শ্রমিক ৮টি ট্রলার নিয়ে চাল উদ্ধার কাজে অংশ নেন। চাল অপসারণ কাজ শেষে বাল্কহেডটি উদ্ধার করতে দুই তিন দিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন উদ্ধার কাজে অংশ নেওয়া শ্রমিকরা। তবে দীর্ঘ সময় পানির নিচে থাকায় বেশির ভাগ চালের বস্তা ফেটে গেছে এবং চাল ফুলে উঠেছে।
শ্রমিক শেখ রাজু বলেন,৭ জন ডুবুরি ও ৫০ জন শ্রমিক মিলে চাল উদ্ধার শুরু করেছি। দুপুর পর্যন্ত দেড় হাজার বস্তা চাল উঠানো সম্ভব হয়েছে। এই ভাবে কাজ করলে তিন দিনের মত সময় লাগবে।
রবিউল নামের আরেক শ্রমিক বলেন, জাহাজটি যেখানে ডুবেছে সেখানে প্রায় ৩০ ফুট পানি রয়েছে। ডুবুরিরা অক্সিজেন পানির নিচে গিয়ে হুক লাগিয়ে দেয়, আর আমরা উপর থেকে টেনে তুলি। তবে চালগুলো ফুলে উঠেছে। বেশিরভাগ বস্তা ফেটে গেছে।
চাল পরিবহনকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স আব্দুর রশিদ এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি মো. আরাফাত বলেন, ডুবে যাওয়া এমভি সাফিয়া নামের বাল্কহেডটির মাধ্যমে আমরা সরকারি এ চাল মোংলা খাদ্য গুদামে পৌঁছানোর দায়িত্বে ছিলাম। সকাল থেকে আমরা চাল উত্তোলনের কাজ শুরু করেছি। চাল উত্তোলনের পর ডুবে যাওয়া বাল্কহেডটি উদ্ধার করা হবে।
মোংলা নৌ পুলিশের ইনচার্জ সৈয়দ ফকরুল ইসলাম বলেন,বাল্কহেডটিকে ধাক্কা দেওয়া লাইটার এভি শাহাজাদা-৬’ কে রোববার রাতে জব্দ করা হয়েছে। চাল পরিবহনকারী প্রতিষ্ঠান, বাল্কহেডের শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট সবার সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থ পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে মামলা দায়ের করা হবে।