চৌগাছায় জমে উঠেছে পেঁয়াজের চারার হাট

0

 

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু, চৌগাছা (যশোর) ॥ ভাতি পেঁয়াজ চাষে ঝুঁকে পড়েছেন চৌগাছার কৃষক। পেঁয়াজের ভাল দাম থাকায় কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। পেঁয়াজ চাষ বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাতি পেঁয়াজের চারার হাটও জমে উঠেছে। বেচাকেনা ভাল হওয়ায় মহাখুশি ব্যবসায়ীরা। চলতি মৌসুমে চৌগাছায় ভাতি পেঁয়াজ চাষ লক্ষমাত্রা অতিক্রম করেছে বলে জানায় কৃষি অফিস।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে চৌগাছাতে ১২০ হেক্টর জমিতে ভাতি পেঁয়াজ চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ইতোমধ্যে অতিক্রম করে ১৪০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। পেঁয়াজ চাষ বৃদ্ধি পাওয়ায় বাজারের একমাত্র চারা বিক্রির হাট মাদ্রাসা সড়ক এখন জমজমাট। ভোর হতে বিক্রেতারা চারা নিয়ে হাজির হচ্ছেন বাজারে। খুব সকাল থেকেই চলছে বেচাকেনা। পেঁয়াজের চারার চাহিদা ভাল ও বিক্রি সন্তোষজনক হওয়ায় খুশি ব্যবসায়ীরা।
সোমবার সকালে চৌগাছার মাদ্রাসা সড়কে চারা বিক্রির হাটে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতা -বিক্রেতার সরব উপস্থিতিতে জমে উঠেছে হাট। হাঁড় কাপানো শীতকে উপেক্ষা করে তারা ছুটে এসেছেন হাটে। চাহিদা মত চারা কিনে নিয়ে ফিরছেন আপন ঠিকানায়।
কথা হয় ঝিকরগাছা উপজেলার বালিয়া গ্রামের কৃষক হানেফ আলীর সাথে। তিনি বলেন, এক বিঘা জমিতে ভাতি পেঁয়াজ চাষ করবো। চৌগাছা হাটে সুলভ দামে চারা পাওয়া যায়। তাই খুব সকালে হাটে ছুটে এসেছি। চৌগাছার মোহাম্মদপুর গ্রামের কৃষক ফারুক হোসেন বলেন, দেশে পেঁয়াজের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। বাজার দরও ভাল। তাই এ বছর আমি দেড় বিঘা জমিতে ভাতি পেঁয়াজ চাষে মনস্থির করেছি। ইতোমধ্যে জমি প্রস্তুত সম্পন্ন হয়েছে। আজ চারা কিনতে পারলে আগামীকাল তা রোপণ করব। তবে অন্য বছরগুলোর তুলনায় এ বছর চারার দাম বেশি।
ভাতি পেঁয়াজের চারা বিক্রেতা চৌগাছার কদমতলা গ্রামের জায়েদ আলী, হামজার আলী, তরিকুল ইসলাম, চাঁদপুরের আবুল কাশেম বলেন, ভাতি পেঁয়াজের চারা উৎপাদনে চৌগাছা অঞ্চলের মাটি খুবই উপযোগী। এখানে যেসব ব্যবসায়ী চারার ব্যবসা করছেন তারা অধিকাংশ নিজের জমিতে চারা উৎপাদন করেছেন। এবার চারার চাহিদা বেশি থাকায় অনেকে পাশের মান্দারতলা, ঝিনাইদহের শৈলকুপা ও ফরিদপুর জেলা হতে চারা সংগ্রহ করে হাটে নিয়ে আসেন। বিক্রেতারা বলেন, এক বিঘা জমিতে চারা তৈরি করতে গিয়ে কৃষককে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা ব্যয় করতে হয়। ভাল হলে বিঘায় ৫০ থেকে ৮০ মণ চারা উৎপাদন হয়। প্রকার ভেদে এক কেজি চারা ৫০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বর্তমান বাজার দর ভাল থাকায় এ বছর চারা ব্যবসায়ীরা বেশ লাভবান হবেন।
পেঁয়াজ চাষি হানেফ আলী বলেন, রোপণের ওপর নির্ভর করে বিঘা প্রতি কত মণ চারা লাগবে। যদি কেউ হাতের ব্যবধানে ৪/৫টি চারা রোপণ করেন তবে ওই কৃষকের প্রায় ৬ মণ চারা লাগে। ভাল ফলন হলে বিঘা প্রতি ৯০ থেকে ১০০ মণ পেঁয়াজ উৎপাদন হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুশাব্বির হোসাইন বলেন, পেঁয়াজের বাজার দর ভাল হওয়ায় কৃষক পেঁয়াজ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। ইতোমধ্যে উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে। লাল তীর, দেশি তাহেরপুরী ও লাল তীর কিং এই তিন জাতের পেঁয়াজ চাষ বেশি হচ্ছে। কৃষক যাতে পেঁয়াজ চাষে কোন প্রকার সমস্যায় না পড়েন সে লক্ষ্যে কৃষি অফিস সর্বদা নজর রাখছে।