বিজয়ের মাস

0

মাসুদ রানা বাবু ॥ আজ ১১ ডিসেম্বর। বাঙালি জাতির জন্য এক অবিস্মরণীয় ঐতিহাসিক দিন। ১৯৭১ সালের এই দিন দেশের প্রথম পাক হানামুক্ত যশোরে জনসভা হয়। যশোর টাউন হল মাঠে সেই ঐতিহাসিক জনসভা হয়। যে মঞ্চের ওপর সেই জনসভায় অনুষ্ঠিত হয় সেটি বর্তমানে স্বাধীনতা উন্মুক্ত মঞ্চ নামে পরিচিতি। মুজিব নগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন সেই ঐতিহাসিক জনসভায় সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, আর ধ্বংস নয়,যুদ্ধ নয়। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাকে নতুন করে গড়ে তোলায় আমাদের এখন আমাদের কাজ। তিনি সেদিন স্বাধীনতার চেতনায় সকল দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। জনসভায় অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, সংসদ সদস্য ফণীভূষণ মজুমদার, রওশন আলী, তবিবর রহমান সরদার,মোশারফ হোসেনসহ রণাঙ্গণের বীর যোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন। তাজউদ্দিন আহমেদ তার বক্তব্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যেন কোন অবনতি না হয় তার জন্য তৎকালীন যশোরের জেলা প্রশাসক ও কোতয়ালি থানার ওসিকে নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি বেনাপোল হয়ে যশোরের সেই ঐতিহাসিক মাহেন্দ্রক্ষণে যোগদান শেষে আবার কলকাতায় ফিরে যান। সে দিন বনগাঁও থেকে অসংখ্য শরণার্থী বাইসাইকেলে জনসভায় যোগ দান করেন। ঐতিহাসিক সেই জনসভায় ওয়াশিংটন পোস্ট, লন্ডনের ডেইলি টেলিগ্রাফ,নিউইর্য়ক টাইমস পত্রিকাসহ বিদেশি অনেক পত্রিকার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। যশোরের বীরমুক্তিযোদ্ধা ইয়াকুব কবির সেদিনে সেই ঐতিহাসিক মাহেন্দ্রক্ষণের স্মৃতিচারণ করে বলেন, সেদিন জনসভাকে কেন্দ্র করে যশোর শহরে রণাঙ্গণের বীর যোদ্ধাদের পাশাপাশি আবাল,বৃদ্ধ বণিতা সকলের সরব উপস্থিতিতে জনস্রোত সৃষ্টি হয়। সেদিন সকলে বাঁধভাঙা উল্লাসে মেতেছিলেন। এতিহাসিক দিনটি উদযাপন উপলক্ষ্যে যশোর ইনস্টিটিউট বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সম্মানা প্রদান। ১১ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক সেই জনসভার মুহূর্তটি যিনি সেদিন ক্যামেরা বন্দি করেছিনে সেই কুষ্টিয়ার বীরমুক্তিযোদ্ধা আলোকবচিত্রী আব্দুল হামিদ রায়হানকে সম্মাননা প্রদান করা হবে।