মধ্যরাতে বাড়িতে তান্ডব চালানো পুলিশ দলকে আত্মহত্যার হুমকি দিয়ে রক্ষা যুবদল নেতার স্ত্রীর

0

স্টাফ রিপোর্টার॥ যশোরে পুলিশের বিরুদ্ধে মধ্যরাতে যুবদল নেতার বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও মালামাল নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে । এ সময় আনোয়ার পারভেজ নামের ওই যুবদল নেতাকে না পেয়ে তার স্ত্রী মুক্তি খাতুনকে মহিলা দল নেত্রী আখ্যা দিয়ে তাকেও আটকের চেষ্টা চালানো হয়। এসময় তিনি তার শিশুপুত্রকে সাথে নিয়ে ফেসবুকে লাইভে এসে আত্মহত্যার হুমকি দিলে পুলিশ সদস্যরা ফিরে যান।
সোমবার গভীর রাতে যশোর শহরের খড়কি শাহ আব্দুল করিম সড়কে এ ঘটনা ঘটে। তবে যশোরে পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
যুবদল নেতা আনোয়ার পারভেজের স্ত্রী মুক্তি খাতুন জানান, সোমবার রাত দেড়টার দিকে একটি পুলিশ ভ্যান ও একটি মাইক্রোবাসসহ দুটি মোটরসাইকেলে ২৫ থেকে ৩০ জন পুলিশ সদস্য তাদের প্রাচীর টপকে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময় তারা ঘরের দরজা ভাঙচুর করে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা চালায়। ভাঙচুরের শব্দে তার ঘুম ভেঙে যায়, তখন তিনি বাইরে এসে পুলিশ দেখতে পান।
মুক্তি খাতুন আরও জানান, এসময় পুলিশ সদস্যরা আনোয়ার পারভেজের উদ্দেশ্যে বলতে থাকেন- তাকে ধরতে পারলে এমন জায়গায় ‘হানদানি’ দেবেন যে মজা টের পাবে। পুলিশ মিছিল করার জন্যও পারভেজের উদ্দেশ্যে হুমকি দেন।
পুলিশের ওই দলটি গৃহবধূ মুক্তি খাতুনকেও গালিগালাজ করেন এবং তাকে মহিলা দলের নেত্রী আখ্যা দিয়ে দরজা ভেঙে ধরে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। আতঙ্কে মুক্তি তখন তার ৫ বছরের শিশুপুত্রকে সাথে নিয়ে ফেসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যার হুমকি দিলে পুলিশ সদস্যরা দরজা ভাঙার চেষ্টা থেকে নিবৃত হন।
তবে পুলিশ সদস্যরা যুবদল নেতার বাড়িতে প্রবেশ করতে না পারলেও বাড়ি সামনে এবিএল এন্টারপ্রাইজ নামের তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। সেখান থেকে কম্পিউটার,ওয়াইফাইয়ের অনু, রাউটারসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স ভিডাইস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য মালামাল নিয়ে যায়।
যুবদল নেতার স্ত্রী মুক্তি খাতুন আরও জানান, ঘটনার সময় বাড়িতে তিনিসহ তার ৫ বছর বয়সী শিশুপুত্র, নব্বই বছর বয়সী দুইবার হৃদরোগ আক্রান্ত গুরুতর অসুস্থ শাশুড়ি ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। তারা সকলেই ভীত- সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন।
একই রাতে পুলিশ সদস্যরা নগর যুবদলের আহ্বায়ক আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আরিফের বাড়িতে অভিযান চালান। এ সময় তাকে না পেয়ে বাড়িতে থাকা দুইটি মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। মোটরসাইকেল নিতে ব্যর্থ হয়ে চলে যাওয়ার সময় পরিবারের সদস্যদের সাথে চরম অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এদিকে যশোর সদর উপজেলার রামনগর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক মারুফ হোসেনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে না পেয়ে বাড়ি থেকে স্বজনদের দুটি মোবাইল ফোন নিয়ে চলে যায় পুলিশ।
একই রাতে পুলিশ নগর যুবদল নেতা হাফিজুর রহমান, কামরুল ইসলাম, মনিরামপুর উপজেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম, রোহিতা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি আল মামুন পিন্টু, সাধারণ সম্পাদক সিয়াম খানের বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদেরকে না পেয়ে স্বজনদের সাথে চরম অসৌজন্যমূলক আচরণ করে।
এছাড়া অভিযান চালিয়ে নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর হোসেন দফাদার, নগর বিএনপি নেতা কাজী কিছলু, যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম, রবিউল ইসলামস রবিকে আটক করেছে পুলিশ।
তবে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) বেলাল হোসাইন অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, তাদের অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই। পুলিশ কারও বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে না। কেবলমাত্র যাদের নামে মামলা আছে তাদেরকে আটক করছে।