টিকা কাজ করে আজীবন!

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ কোভিড থেকে সেরে উঠলে বা এই রোগের ভ্যাকসিন গ্রহণ করলে শরীরে যে অ্যান্টিবডি গড়ে ওঠে তা আজীবন কার্যকরী থাকে বলে প্রমাণ পেয়েছেন গবেষকরা। তারা বলছেন, যারা কোভিড থেকে সেরে উঠেছেন তাদের অস্থি-মজ্জায় দীর্ঘ সময় টিকে থাকে এমন অ্যান্টিবডি উৎপাদনকারী কোষের উপস্থিতির বিষয়ে নিশ্চিত তারা। গবেষণায় জানা গেছে, আক্রান্ত হওয়ার পর যে প্রতিরোধ ব্যবস্থা দেহে গড়ে ওঠে তা অসাধারণভাবে দীর্ঘমেয়াদি। একইসঙ্গে ভ্যাকসিনের ফলে যে অ্যান্টিবডি সৃষ্টি হয় সেটিও আজীবন স্থায়ী থাকে। অ্যান্টিবডি হচ্ছে কোনো রোগ থেকে শরীরকে রক্ষা করার সব থেকে বড় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
গবেষকরা জানিয়েছেন, কোভিডে আক্রান্ত হলে প্রাথমিকভাবে শরীরে থাকা প্লাজমাব্লাস্টস কোষ থেকে অ্যান্টিবডি উৎপাদিত হয়। কিন্তু একবার রোগমুক্ত হয়ে গেলে এই কোষগুলো বিলুপ্ত হতে শুরু করে। তখন অ্যান্টিবডি উৎপাদিত হতে শুরু করে দীর্ঘমেয়াদি কোষ থেকে। মেমোরি বি সেল রক্তের মধ্যে এই রোগের নমুনা খুঁজে বেড়ায়। তখন দেহের অস্থি-মজ্জায় অ্যান্টিবডি প্রবেশ করে দশকের পর দশক একে টিকিয়ে রাখে। গবেষণা দলের সদস্য ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ আলি এলেবেডি বলেন, এই প্লাজমা কোষগুলোই হচ্ছে আমাদের জীবনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস। গত ২৪শে মে এই গবেষণাটি ন্যাচার জার্নালে প্রকাশিত হয়। গবেষকরা দেখেছেন, কোভিড আক্রান্ত হলে অন্য ভাইরাসজনিত অ্যান্টিবডি বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে। যদিও বিভিন্ন ধরনের কোভিডের ক্ষেত্রে এই মাত্রা আলাদা আলাদা দেখা গেছে। প্রাথমিকভাবে যারা আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাদের মধ্যে দেখা গেছে সুস্থ হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই অ্যান্টিবডি দেহ থেকে হারিয়ে গেছে কিংবা দুর্বল হয়ে পড়েছে। সাম্প্রতিক এই গবেষণার জন্য, এলেবেডির দল ৭৭ জনের শরীরে অ্যান্টিবডির উৎস খুঁজে বের করতে কাজ করেন। এতে দেখা যায় প্রথম ৪ মাস পর আসলেই অ্যান্টিবডি কমতে শুরু করেছে দেহে। কিন্তু ১১ মাস পরে গিয়েও তারা শরীরে নতুন অ্যান্টিবডি শনাক্তে সক্ষম হন। এই অ্যান্টিবডিগুলো কোভিডের ভাইরাসের প্রোটিন স্পাইক শনাক্তে সক্ষম। এরপরই তারা এই নতুন অ্যান্টিবডির উৎস খুঁজতে শুরু করেন। তারা মেমোরি বি সেল এবং অস্থি-মজ্জা সংগ্রহ করে গবেষণা শুরু করেন। এতেই দেখা যায় কোভিড আক্রান্ত হওয়ার বহুদিন পরেও তাদের শরীরে মেমোরি বি সেল রয়ে গেছে এবং এটি কোভিড থেকে দেহকে রক্ষায় সক্ষম।