শ্রীলঙ্কাকে লজ্জায় ডুবিয়ে ভারতের ইতিহাস

0

স্পোর্টস ডেস্ক॥ শ্রীলঙ্কাকে লজ্জায় ডুবালো ভারত। উপহার দিলো বিশ্বকাপ ইতিহাসের দ্বিতীয় বড় পরাজয়৷ টেস্ট খেলুড়ে দেশ হিসেবে যা সবচেয়ে বড় পরাজয়। ওয়াংখেড়েতে ভারতের কাছে লঙ্কানরা হেরেছে ৩০২ রানে৷ এই হারে বিশ্বকাপও শেষ তাদের, অধরা রয়ে গেল সেমিফাইনাল স্বপ্ন।
বৃহস্পতিবার টসে হেরে আগে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ৩৫৭ রান সংগ্রহ করে ভারত। বিশ্বকাপ ইতিহাসে যা রান তাড়া করে জিততে পারেনি কোনো দল। ফলে রেকর্ড গড়েই জিততে হতো লঙ্কানদের। রেকর্ড গড়লো বটে, তবে এই রেকর্ডগুলো ভুলে যাওয়াই মঙ্গল হবে। শ্রীলঙ্কা গুটিয়ে যায় ১৯.৪ ওভারে মাত্র ৫৫ রানে।
সিরাজ জুজু কাটাতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। এশিয়া কাপ ফাইনালের পর আরো একবার এই পেসারের তা-বে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। নিজের ২ ওভারের মাঝে ৩ উইকেট তুলে লঙ্কানফের মেরুদ- ভেঙে দেন তিনি। মাত্র ৬ রানে ৪ উইকেট হারায় তারা।
যার শুরুটা করেন বুমরাহ। ইনিংসের প্রথম বলেই ভেঙে দেন উদ্বোধনী জুটি। গোল্ডেন ডাক উপহার দিয়ে ফেরান পাথুম নিশাঙ্কাকে। অপরপ্রান্তে নিজের প্রথম ওভারের প্রথম বলেই উইকেটের দেখা পান সিরাজ। একই ওভারে কোনো রান না দিয়েই ঝুলিতে ভরেন আরো এক উইকেট।
জোড়া উইকেট নিয়েও ক্ষান্ত হননি, পরের ওভারেও পান উইকেটের দেখা। টানা ১১ বলে কোনো রান না দিয়ে সিরাজ শিকার করেন ৩ উইকেট! করুনারতেœ ও সাদিরা সামারাবিক্রমা ফেরেন ডাক মেরে আর কুশল মেন্ডিসের ব্যাটে আসে ৯ বলে ১ রান। মাত্র ৩ রানে ৪ উইকেট হারায় লঙ্কানরা।
দুই পেসারের উইকেট উদযাপন যেন লোভী তুলে মোহাম্মদ শামিকে। দশম ওভারে প্রথমবার বল করতে এসে পরপর দুই বলে ফেরান চারিথ আসালাঙ্কা ও হেমান্থকে।
পাওয়ার প্লেতে মাত্র ১৪ রানে ৫ উইকেট হারায় লঙ্কানরা। যা বিশ্বকাপ ইতিহাসের সর্বনি¤œ পাওয়ার প্লে সংগ্রহ। যদিও পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কারও একই রেকর্ড রয়েছে। তবে লঙ্কানদের মতো ৬ উইকেট হারিয়ে বসেনি কোনো দল!
পরে আরো ৩ উইকেট নেন শামি। চলতি বিশ্বকাপে নিজের তৃতীয় ম্যাচেই দ্বিতীয়বার ৫ উইকেট নিলেন এই পেসার। লঙ্কানদের লজ্জায় ফেলার পথে ১৮ রানে নেন ৫ উইকেট। যা তার ক্যারিয়ার সেরা সংগ্রহ। আসরে ৩ ম্যাচেই ১৪ উইকেট নিলেন শামি!
এদিকে লঙ্কানদের পক্ষে সর্বোচ্চ ১৪ রান করেন কাসুন রাজিথা ১২ রান করে আসে থিকসানা ও ম্যাথিউজের ব্যাটে। একাদশের ৫ জনই ফেরেন ডাক মেরে। ওয়ানডে ক্রিকেটে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ডাক মারার রেকর্ড হলেও বিশ্বকাপে যা এক ইনিংসে সর্বোচ্চ।
এর আগে বৃহস্পতিবার ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই রোহিত শর্মার উইকেট হারায় ভারত। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই মাদুশঙ্কার শিকার হয়ে ৪ রানে ফেরেন তিনি। তবে অধিনায়ককে হারালেও পথ হারায়নি স্বাগতিকরা। লঙ্কানদের চেপে ধরা সুযোগ বড় হতে দেননি বিরাট কোহলি ও শুভমান গিল।
শুরুর ধাক্কা সহজেই কাটিয়ে উঠে ভারত। স্বাচ্ছন্দ্যেই পৌঁছে যায় তিন অংকের ঘরে। কোহলি-গিলের জোটে পেয়ে যায় বড় সংগ্রহের ভীত। ফিফটি তুলে নিয়ে দু’জনেই ছুটতে থাকেন তিন অংকের ঘরের দিকে। তবে ভাগ্য সায় দেয়নি, দুজনের কারোই শতকের দেখা পাওয়া হয়নি।
শতকের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান মাদুশঙ্কা। জোট ভাঙে শুভমান গিলের বিদায়ে। শতকের খুব কাছে থেকে ফেরেন ৯২ বলে ৯২ করে। ১৮৯ রান যোগ হয় দু’জনের যুগলবন্দীতে। এক ওভার পর কোহলিও ধরেন সাজঘরের পথ। ৯৪ বলে ৮৮ রান আসে তার ব্যাটে। যা কোহলির ক্যারিয়ারের ৬৯তম অর্ধশতক।
এরপর ইনিংস এগিয়ে নেয়ার দায়িত্বটা নিজ কাঁধে তুলে নেন শ্রেয়াস আইয়ার। দ্রুততার সাথে বাড়াতে থাকেন রানের গতি। যদিও লোকেশ রাহুল ১৯ বলে ২১ ও সূর্য কুমার ফেরেন ৯ বলে ১২ রানে। এদিকে নিজের মতো করে খেলতে খেলতে আইয়ার ছুটতে থাকে শতকের দিকে। তবে তাকেও আটকে দেন মাদুশঙ্কা। ৪৭.৩ ওভারে ৩৩৩ রানের মাথায় ফেরেন আইয়ার। তার ব্যাটে আসে ৫৬ বলে ৮২ রান। এরপর রবিন্দ্র জাদেযার ২৪ বলে ৩৬* রানের ইনিংস ভারতকে পার করায় সাড়ে তিন শ’ রানের গ-ি। ৭ উইকেট হারিয়ে ভারতের ইনিংস থামে ৩৫৮ রানে।