চৌগাছায় সোলারের টাকার অভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ মিলছে না

0

 

স্টাফ রিপোর্টার, চৌগাছা (যশোর) ॥ যশোরের চৌগাছায় নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ যেন সোনার হরিণ। বিদ্যুত বিভাগ সম্প্রতি একটি নীতিমালা জারি করায় বিদ্যুত সংযোগ নিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সব ধরনের গ্রাহককে। বিশেষ করে স্বল্প আয়ের মানুষের পক্ষে বিদ্যুত সংযোগ নেয়া এখন দুঃস্বপ্নের মতই। দ্রুত নীতিমালা পরিবর্তন করার দাবি জানিয়েছেন উপজেলার বিদ্যুত ব্যবহারকারীরা।
অভিযোগ রয়েছে,এক সময় প্রতিটি এলাকায় নতুন মিটারের জন্যে আবেদন করলেই ওই ব্যক্তি পেয়ে যেতেন নতুন সংযোগ। কিন্তু বর্তমানে সেটি আর সম্ভব হচ্ছে না। বিদ্যুত বিভাগ নতুন নীতিমাল আরোপ করেছে। নীতিমালায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে বর্তমানে কোন ব্যক্তি নতুন বিদ্যুত সংযোগ নিতে হলে জারি করা নীতিমালা অবশ্যই মেনে সংযোগ নিতে হবে। সেখানে উল্লেখ আছে, একজন ব্যক্তি নতুন সংযোগের জন্যে পূর্বের মতই আবেদন করবেন। তবে আবেদনের আগে ঘোষিত নীতিমালার আওতায় ওই ব্যক্তির বাড়ি যদি ১ হাজার স্কয়ার ফুট হয় তাহলে অবশ্যই তাকে নির্ধারিত টাকা জমা দিয়ে আগে সোলার বিদ্যুত গ্রহণ করতে হবে। স্কয়ার ফুট অনুযায়ী সোলার বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করা আছে। সেখানে ৫০ হাজার থেকে ৭০ হাজার এমনকি ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত জমা দিয়ে প্রথমে সোলার বিদ্যুত সংযোগ নিতে হবে। তারপর মিলবে নতুন মিটার। আবাসিকের বেলায় ১ হাজার স্কয়ার ফুট নির্ধারন করা হলেও বাণিজ্যিকে কোন ফুট নির্ধারণ করা হয়নি। বাণিজ্যিক মিটারের আবেদন হলেই বাধ্যতামূলক তাকে সোলার নিতে হবে। নতুন এই নীতিমালা মেনে বিদ্যুত নেয়া অনেকের জন্যেই যেন দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উপজেলার পেটভরা গ্রামের আব্দুল গনি বলেন, চৌগাছা বাজারে তার একটি টিনের ছাউনির কাঁচা মালের আড়ত আছে। নতুন মিটারের জন্যে তিনি আবেদন করেন। কাগজপত্র সব কিছু নিয়ে বিদ্যুত অফিসে গেলে সোলার বিদ্যুতের জন্যে টাকা জামা দেয়ার কথা বলা হয়। বলেন, আমি গরিব। দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ। আমার পক্ষে অর্ধলাখ টাকা জমা দিয়ে সোলার নেয়া কোনভাবেই সম্ভব না। সে কারণে এক বুক হতাশা নিয়ে ফিরে এসেছি।
পৌর এলাকার মো. স্বপন বিশ্বাস বলেন, ছোট একটি চাকরি করে দায়দেনা হয়ে একটি বাড়ি করেছি। নতুন মিটারের জন্যে আবেদন করে বিদ্যুত অফিসে গেলে সোলারের টাকা জমা দেয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু যে পরিমাণ টাকা জমা দিতে হবে সেই পরিমাণ টাকা আমার পক্ষে জমা দেয়া সম্ভব না। বর্তমানে বিদ্যুতহীন বাড়িতে অনেক কষ্টে পরিবার নিয়ে বসবাস করছি।
বাজারের ব্যবসায়ী সাহেব আলী বলেন, তার এক নিকট আত্মীয়র জন্য নতুন বিদ্যুত নিতে অফিসে গেলে কর্তৃপক্ষ সোলারের হিসেব দেয়ায় বিদ্যুত নিতে ভুলেই গেছি। সমাজের বৃত্তবানদের পক্ষে নীতিমালার নিয়ম মানা সম্ভব হলেও গরিবদের পক্ষে এটি একেবারেই অসম্ভব।
একাধিক গ্রহক বলেন, বিদ্যুত বিভাগ যে নিয়মে নতুন সংযোগ দিচ্ছেন তাতে করে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ মানুষ নতুন সংযোগ নিতে ব্যর্থ হবেন। তাই নতুন এই নিয়ম পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী উপজেলাবাসী।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চৌগাছা পল্লী বিদ্যুতর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী বালী আবুল কালাম বলেন, বিদ্যুত বিভাগ যে নীতিমালা দিয়েছে তার বাইরে যাওয়ার তো কোন সুযোগ নেই। গ্রাহকদের বিষয়টি বিবেচনা করে আমরা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। দেখা যাক সর্বশেষ কী হয়।