যশোরে রিপন হত্যায় হাসিবসহ ১০ জনের নামে মামলা, চাকুসহ আটক এক জনের আদালতে স্বীকারোক্তি

0

 

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর শহরের মুজিব সড়কে রিপন হোসেন হত্যার ঘটনায় সন্ত্রাসী হাসিবসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গত মঙ্গলবার রাতে কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। নিহতের মা খড়কি বামনপাড়ার মৃত হাবিবুর রহমান গাজীর স্ত্রী রুপবান মামলাটি করেছেন। পুলিশ এই মামলায় তানমীন হোসেন ইমন (২০) নামে এজাহারভুক্ত এক আসামিকে চাকুসহ আটক করেছে। চাঁচড়া চেকপোস্ট এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।
পুলিশ জানায়, গত মঙ্গলবার রাত পৌনে ৯টার দিকে নিহত রিপন হোসেনের মা রুপবান ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৫/৭ জনকে আসামি করে কোতয়ালি থানায় মামলা করেন। আসামিরা হচ্ছে- শহরের বারান্দী মোল্লাপাড়া বাঁশতলা এলাকার মৃত জাহাঙ্গীরের ছেলে বর্তমানে গাড়িখানা রোডের বাসিন্দা হাসিব (২২), রেলগেট পশ্চিমপাড়ার লিয়াকত আলীর ছেলে দেলোয়ার হোসেন দেলু (২৪), খড়কির আব্দুল মাজেদের ছেলে সাকলাইন (২০), রেলগেট কলাবাগান এলাকার জাহাঙ্গীর ওরফে মুজিবরের ছেলে পিচ্চি রাজা (২০), খড়কির কামালের ছেলে বিল্লাল (২০), সাহেব আলীর ছেলে রানা (২০), চাঁচড়া ডালমিল পশ্চিমপাড়ার আব্দুর জব্বারের ছেলে বর্তমানে খড়কি কবরস্থান মসজিদ সংলগ্ন কাসার দীঘিরপাড়ের জনৈক রনির বাড়ির ভাড়াটিয়া বাসিন্দা তানমীন হোসেন ইমন (২০), রেলগেট এলাকার মনি সাগর (২২), খড়কির মতিয়ার রহমানের ছেলে জিসান (২০) ও ঘোপের আবুল কাশেমের ছেলে আরিফ (১৯)।
ডিবি পুলিশ সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে এসআই শাহীনুর রহমান শহরের চাঁচড়া চেকপোস্ট এলাকায় অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত আসামি ইমনকে আটক করেছেন। এ সময় তার কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ১টি চাকু উদ্ধার করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুরাতন কসবা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইনসপেক্টর মো. রেজাউল করিম জানান, আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইমন পুলিশকে জানিয়েছে, এম এম কলেজ এলাকার একটি ছাত্রাবাসের দখল নিয়ে নিহত রিপনের সঙ্গী মোস্তাকের সাথে আসামি হাসিব এবং খড়কি এলাকার একজন ট্রাক শ্রমিক নেতার দ্বন্দ্ব চলছিল। ওই ছাত্রবাসের বাসিন্দাদের নিয়ে রাজনৈতিক দলের মিছিল-মিটিংয়ে সকলেই যেতে চান। এ কারণে ছাত্রাবাসের দখল নিতে চান ওই ৩ জন। এই দ্বন্দ্বের জের ধরে হাসিব ও তার লোকেরা মোস্তাকদের শায়েস্তা করার পরিকল্পনা করেন। ঘটনার দিন রাত ৮টার দিকে হাসিবসহ তারা খবর পান যে, মোস্তাকরা পঙ্গু হাসপাতালের দিক থেকে মুজিব সড়কে যাচ্ছেন। খবর পেয়ে তারা মুজিব সড়কে অবস্থান করেন। কিছু সময় পর মোস্তাক ও রিপনসহ অন্যদের পায়ে হেঁটে আসতে দেখেন তারা। তাদের কাছাকাছি এলে তারা মোস্তাকদের ওপর চড়াও হন। এ সময় মোস্তাকের সঙ্গী রিপন প্রথমে হাসিবের এক সঙ্গীকে ছুরিকাঘাত করেন। তখন হাসিবরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিপনকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এতে রিপন মারা যায়।
ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, বুধবার আটক ইমনকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইমরান আহম্মেদ তার জবানবন্দি গ্রহণ শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রধান আসামি হাসিব এক সময় শিপলু (জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা) নামে এক ব্যক্তির সাথে চলাফেরা করতেন। রিপন হত্যার এক সপ্তাহ আগে একজন পৌর কাউন্সিলর তাকে তার গ্রুপে ভিড়িয়ে নেন। মূলত হাসিব একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তাকেসহ মামলার অন্য আসামিদের আটকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
আসামিদের মধ্যে জিসান নামে এক আসামি খড়কির সন্ত্রাসী ডিকুর ছোটভাই। তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।