সবজি ১০০ টাকার ওপরে মাছের বাজারেও আগুন

0

শেখ আব্দুল্লাহ হুসাইন ।।  বাজারে অধিকাংশ সবজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকার ওপরে। আলু, পিঁয়াজ, ডিম, চিনি সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। চাইলেই আর এখন আলুভর্তা ও ডিমভাজি জুটাতে পারছেন না নিম্ন বিত্তের মানুষ। বাজারের সব পণ্যের মূল্য সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা নির্ধারণ করছে। ভোক্তারা বলছেন সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ হয়েছে। শুক্রবার যশোরের বড়বাজার ঘুরে এমন সব চিত্র পাওয়া যায়।
শুক্রবার বড়বাজারে দেখা যায়, প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, ফার্মের মুরগির ডিম প্রতি পিস সাড়ে ১২ টাকা, দেশি পিঁয়াজ প্রতি কেজি ৯০টাকা, খোলা চিনি প্রতি কেজি ১৩২ টাকা।
অথচ বাণিজ্য মন্ত্রণালায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর আলুর খুচরা বিক্রয় মূল্য প্রতি কেজি ৩৫-৩৬ টাকা, ফার্মের মুরগির ডিম প্রতি পিস ১২ টাকা, দেশি পিঁয়াজ প্রতি কেজি ৬৪-৬৫ টাকা ও গত ১০ মে পরিশোধিত খোলা চিনির খুচরা বিক্রয় মূল্য প্রতি কেজি ১২০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। ভোক্তাদের আক্ষেপ সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। সিন্ডিকেট (এক দল ব্যবসায়ী বাজারে আধিপত্য বিস্তার করে ইচ্ছেমত পণ্যের সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে এবং দাম বাড়িয়ে অবৈধভাবে মুনাফা অর্জন করে) ব্যবসায়ীরাই বাজারের পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করছে।
শুক্রবার এমনই অভিমত ব্যক্ত করলেন বাজারে আসা ক্রেতা বেসরকারি চাকরিজীবী শহরের বারান্দিপাড়ার আইয়ুব আলী। এ ক্রেতা আরও জানান, দুর্মূল্যের বাজারে আগে কম টাকায় পরিবারের সদস্যদের শুধুমাত্র আলুভর্তা, ডিমভাজি ও ডাল ভাত দিয়ে দুবেলা খাবার জুটানো যেত। কিন্তু সিন্ডিকেটব্যবসায়ীরা সেই আলু আর ডিমের ওপরও থাবা বসিয়েছে।
এদিকে, বড়বাজারে পর্যাপ্ত সবজির সরবরাহ থাকলেও তাতে হাত দেওয়ার উপায় নেয়। ভালোমানের সবজি ১০০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। বিক্রেতা নাসির আলী জানান, তিনি গতকাল শুক্রবার কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ১৪০ টাকা, বেগুন ১২০ টাকা, উচ্ছে ১২০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা, করোলা ১০০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, মুখিকচু ১০০ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা, ওল ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, পটল ৭০ টাকা ও বাঁধাকপি ৬০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। তিনি আরও জানান, পাইকারি বাজার থেকে তাদের বেশি দামে এসব সবজি কিনতে হচ্ছে। বড়বাজারের আড়তদার জহিরুদ্দিন কাজল জানান, সম্প্রতি টানা বৃষ্টিতে সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, এ কারণে বাজারে সরবরাহও কম, যা আসছে তার দাম অনেক বেশি। তিনি আরও জানান, আবহাওয়া ভালো থাকলে আগামী দু সপ্তাহে সবজির বাজার স্বাভাবিক হয়ে আসবে। তাছাড়া এ সময় শীতের সবজিও বাজারে চলে আসবে।
অপরদিকে প্রজনন মৌসুমে ১২ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে ২২ দিনের জন্য মা ইলিশ শিকার বন্ধের ঘোষণার পরের দিন শুক্রবার বড়বাজার মাছবাজারে অন্যান্য মাছের কেজিতে ৫০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে গেছে।
দেখা যায়, প্রতি কেজি রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা, দেড় কেজি ওজনের রুই মাছের কেজি ৩৫০ টাকা, ৩ কেজি ওজনের রুই মাছের কেজি ৫৫০ টাকা, দেড় কেজি ওজনের কাতলের কেজি ৩৫০ টাকা, ৩ কেজি ওজনের কাতলের কেজি ৪০০ টাকা, ৫ কেজি ওজনের কাতলের কেজি ৫৫০ টাকা, ২টায় কেজি তেলাপিয়া ২২০ টাকা, ২ কেজি ওজনের সিলভার কার্পের কেজি ৩৫০ টাকা, দেশি ট্যাংরা কেজি ৮০০ থেকে ১০০০ হাজার টাকা, ৭টায় কেজি পারশে ১০০ টাকা বাইন মাছ ৮০০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।