কোতয়ালি থানায় ফের দুই মামলায় ৩৮ আসামি,আটক ১১ ১৫ দিনে যশোরে ৮ থানায় বিএনপি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশের ১৩টি ‘নাশকতা’ মামলা

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরের কোথাও কোনো ঘটনা ঘটেনি। তারপরও বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশের কথিত নাশকতার পরিকল্পনা মামলা অব্যাহত রয়েছে।  বুধবারও কোতয়ালি থানায় দুটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এ নিয়ে গত ১৫ দিনে জেলার ৮টি থানায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশ ১৩টি কথিত নাশকতার পরিকল্পনার মামলা করলো।
বিএনপি নেতৃবৃন্দ বরাবরই অভিযোগ করে আসছেন, সরকার বিএনপির আন্দোলনে ভীত হয়ে দমনপীড়ন নীতি বেছে নিয়েছে। এ জন্য পুলিশকে দিয়ে গায়েবি মামলা দায়ের করা হচ্ছে। আন্দোলন জোরদার হওয়ায় ফের গায়েবি মামলা শুরু করেছে পুলিশ। রাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নেতা-কর্মীদের ধরে এনে গায়েবি মামলার আসামি বানিয়ে কারাগারে পাঠাচ্ছে পুলিশ।
নেতৃবৃন্দ জানান, বুধবার কোতয়ালি থানায় দায়ের করা কথিত নাশকতার মামলায় ৩৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে কোতয়ালি থানার এসআই তুহিন বাওয়ালীর দায়ের করা কথিত নাশকতার মামলায় ২০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০/২০০ জন এবং সদর উপজেলার ফুলবাড়ি পুলিশ ক্যাম্পের এসআই পবিত্র বিশ্বাসের দায়ের করা কথিত নাশকতার মামলায় ১৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০/২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। উল্লিখিত দুই মামলায় ১১ জনকে আটক করেছে পুলিশ। বিকেলে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এসআই তুহিন বাওয়ালীর দায়ের করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন, সদর উপজেলার হাটবিলা গ্রামের আব্দুর রশিদ, খোলাডাঙ্গার আক্তারুজ্জামান, রূপদিয়ার বিল্লাল হোসেন, ভেকুটিয়া মাঠপাড়ার ইবাদ মোল্লা, পুরাতন কসবা ঘোষপাড়ার আজগর হোসেন খোকা, সিরাজসিঙ্গা গ্রামের বাবলু, তোলা গোলদারপাড়ার দেলোয়ার হোসেন হিমু, রামনগর মোল্লাপাড়ার শিহাব হোসেন, রামনগর পুকুরকুল এলাকার মাজহারুল ইসলাম রাজীব, রামনগর বিহারী ক্যাম্পের জহির হোসেন, বাজুয়াডাঙ্গা গ্রামের ডালিম, ভাটপাড়া গ্রামের জি এম শাহাজান কবির, কচুয়া গ্রামের গোলাম হোসেন, মহাব্বত, আবাদ কচুয়ার আবু বক্কার, চাউলিয়া গ্রামের সোহেল রানা তোতা, রফিকুল ইসলাম, শ্রীপদ্দি গ্রামের আবু সাঈদ, নরেন্দ্রপুর গ্রামের মাওলানা আক্তার হোসেন ও জিরাট গ্রামের আব্দুল হাই গোলদার। এই মামলায় সকাল সোয়া ৭টার দিকে রাজারহাটে চুকনগর সড়কের পাশে কথিত নাশকতামূলক কর্মকা-ের পরিকল্পনার অভিযোগ এনেছে পুলিশ।
অপরদিকে এসআই পবিত্র বিশ্বাসের দায়ের করা মামলার আসামিরা হলেন, উত্তর ললিতাদহ গ্রামের জহুরুল ইসলাম, তফসীডাঙ্গার আবু তাহের ভূঁইয়া, এড়েন্দা গ্রামের আব্দুল মোতালেব, রামকৃষ্ণপুর গ্রামের ইসরাইল হোসেন, ডা. আব্দুর ছবুর, সাহাবাজপুর গ্রামের রেজাউল ইসলাম, মীরা লাউখালী গ্রামের রফিকুল ইসলাম, আগ্রাইল গ্রামের আবুল কালাম আজাদ, দলেননগর গ্রামের শরিফুল ইসলাম, গহেরপুর গ্রামের জুলফিকার আলী, আগ্রাইল গ্রামের আজগার আলী, ডাকাতিয়া গ্রামের আব্দুল কাদের, ইসলাম সরদার, কাশিমপুর গ্রামের তাইজুল ইসলাম, গহেরপুর গ্রামের সালাউদ্দিন মিয়া, উত্তর ললিতাদহ গ্রামের বিপ্লব হোসেন ও নিশ্চিন্তপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক। এই মামলায় সকাল সাড়ে ৭টার দিকে লেবুতলা বাজারে কথিত নাশকতামূলক কর্মকা-ের পরিকল্পনার অভিযোগ এনেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, এসআই পবিত্র বিশ্বাস তার কথিত নাশকতার মামলার ১ নম্বর ও ৭ নম্বর আসামি উত্তর ললিতাদহ গ্রামের হায়দারের ছেলে জহরুল ইসলাম (৪৫)। অর্থাৎ একই ব্যক্তিকে দুই জায়গায় আসামি করা হয়েছে!
ওই দুই মামলায় আটকরা হলেন আব্দুর রশিদ, আক্তারুজ্জামান, বিল্লাল হোসেন, ইবাদ মোল্লা, আজগার হোসেন খোকা, মিজানুর রহমান বাবুল, জহুরুল ইসলাম, আবু তাহের ভূঁইয়া, আব্দুল মোতালেব, ইসরাইল হোসেন ও ডা. আব্দুর ছবুর।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, ১৫ দিনে কেশবপুর বাদে বাকী ৮টি থানায় কথিত নাশকতার মামলা করা হয়েছে ১৩টি। এর মধ্যে কোতয়ালি থানায় ৫টি, চৌগাছা থানায় ২টি, মণিরামপুর থানায় ১টি, বাঘারপাড়া থানায় ১টি, অভয়নগর থানায় ১টি, ঝিকরগাছা থানায় ১টি, শার্শা থানায় ১টি ও বেনাপোল পোর্ট থানায় ১টি।