মনিরামপুরে চাকরি দেওয়ার নামে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন শিক্ষক জুলফিকার

0

স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর(যশোর)॥ মনিরামপুরে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০ যুবকের কাছ থেকে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগ করা হয়েছে উপজেলার কপালীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক জুলফিকার আলীর বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীরা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সোমবার উপজেলা শিক্ষা অফিসারসহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করেছেন।
এলাকাবাসী জানান, উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের কপালীয়া গ্রামের মৃত আনিসুর রহমানের ছেলে জুলফিকার আলী কপালীয়া পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক। অভিযোগ রয়েছে জুলফিকার আলী এলাকার বেকার যুবকদের বিভিন্ন দফতরে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ২০ জনের কাছ থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। কপালীয়া গ্রামের কৃষক হাসান আলী গাজীর ছেলে তরিকুল ইসলাম মাস্টার্স পাস করে চাকরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তরিকুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার কাছ থেকে জুলফিকার আলী বিভিন্ন সময়ে ১৫ লাখ টাকা গ্রহণ করেন। কিন্তু তাকে চাকরি দেওয়া হয়নি। অপর দিকে একই অভিযোগ করেন আবু সাইদ গাজীর ছেলে শামিম হোসেন। তিনি জানান, কমিউনিটি ক্লিনিকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে জুলফিকার আলী তার কাছ থেকে অগ্রিম এক লাখ টাকা গ্রহণ করেন। কিন্তু তাকেও চাকরি দেওয়া হয়নি। শুধু তরিক্লু ইসলাম অথবা শামিম হোসেন নয়। এরকম প্রতারণা করা হয়েছে ইয়াছিন মোল্যা, মুস্তাক হোসেন, মাসুদ গাজী, রিয়াদ হোসেন, আবদুল লতিফ গাজী, রবিউল ইসলাম, শিরিনা খাতুনসহ ২০ জনের সাথে।
চাকরি না পেয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে টাকা ফেরতের জন্য চাপ প্রয়োগ করলে জুলফিকার আলী এলাকার সন্ত্রাসীদের দিয়ে এসব ভুক্তভোগীকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিচ্ছেন বলে তরিকুল ইসলাম জানিয়েছেন। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কলেজ শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান জানান, ভুক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এলাকায় জনপ্রতিনিধিসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে সালিশও হয়েছে কয়েক দফা। সালিশে টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রতি দেন জুলফিকার আলী। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাউকে টাকা ফেরত দেয়নি। একই অভিযোগ করেন মনোহরপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপির আহ্বায়ক আক্তার ফারুক মিন্টু। মিন্টু জানান, জুলফিকার আলী একজন ভদ্রবেশী প্রতারক।
তবে সহকারী শিক্ষক জুলফিকার আলী বলেন, তরিকুল ইসলামের কাছ থেকে তিনি মাত্র দুই লাখ টাকা গ্রহণ করেছিলেন। বাকিদের কাছ থেকে তিনি কোনো টাকা গ্রহণ করেননি বলে জানিয়েছেন। এ দিকে উপায়ন্ত না পেয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে তরিকুল ইসলাম সোমবার উপজেলা শিক্ষা অফিসার, জেলা শিক্ষা অফিসার, থানার ওসিসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ করেন। এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার(ভারপ্রাপ্ত) কামরুল বাশার উমর ফারুক জানান, ইতোমধ্যে অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সহকারী শিক্ষা অফিসার দেবব্রত কুমার রায়কে। প্রতিবেদন হাতে পাবার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।