বৈরী আবহাওয়ায় যশোরে শিমের ফলন কম হওয়ার শঙ্কা,কৃষি বিভাগের ভিন্নমত

0

আকরামুজ্জামান ॥ শিমের ফলন বিপর্যয়ের কারণে লোকসানে রয়েছেন যশোরের চাষিরা। অন্যান্য বছরে এই সময়ে আগাম জাতের শিম চাষ করে তারা বেশ লাভবান হলেও এ বছর প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে ফল বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
সময়ে বৃষ্টি না হওয়া, মাত্রাতিরিক্ত তাপমাত্রা আবার শিম গাছে ফুল আসার সময়ে বৃষ্টি বেশি হওয়ায় চাষিরা বিপর্যয়ে পড়েছেন। বিঘাপ্রতি জমিতে ৫-৬ কেজি শিমও উৎপাদন হচ্ছেনা। যেকারণে এ বছর শিম চাষ করে বিপর্য়য়ের মুখে পড়ছেন চাষি।
কৃষি বিভাগের সূত্র জানায়, শীতের আগে যশোরের বিভিন্ন উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠে আগাম জাতের শিম চাষ হয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। বাজারে অতিমাত্রায় দাম থাকার কারণে এ সময়ে শিম বিক্রি করে তারা ভালো টাকা আয়ও করেন তারা। তবে এ বছর চাষের উপযুক্ত সময়ে অনাবৃষ্টি ও ফুল আসার সময়ে বৃষ্টির কারণে ফলনে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। তবে আশ্বিনের বৃষ্টির পর শিম গাছে পর্যাপ্ত ফুল ও ফল আসবে বলে কৃষি বিভাগ দাবি করছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে যশোরের বিভিন্ন উপজেলায় প্রায় ১৩৩ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের শিমের আবাদ হয়েছে। জেলার সদর উপজেলার এক সময়ে বেশি শিমের আবাদ হলেও এবার কেশবপুর উপজেলাতেই শুধুমাত্র ৬০ হেক্টর জমিতে শিম আবাদ হয়েছে। বিস্তীর্ণ মাঠের এসব শিম ক্ষেতের বেগুনী রঙের ফুল ও সবুজ পাতায় নয়াভিরাম দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে। তবে এ বছর সময়মতো বৃষ্টিপাত না হওয়া, তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি ফুলের পরাগায়ন হওয়ার মুহূর্তে টানা বৃষ্টিতে ফলন কম হচ্ছে বলে কৃষকরা জানান।
জেলার সদর উপজেলার তীরের হাট এলাকার শিম চাষি আব্দুর রহমান বলেন, অন্যান্য বছরে এই সময়ে তারা প্রতি বিঘা থেকে ৩ থেকে ৪ মণ শিম উত্তোলন করলেও এখন ৮-১০ কেজিও পাওয়া যাচ্ছেনা। বিরূপ আবহাওয়া ও পোকার আক্রমণে ফলন কম হচ্ছে। সর্বশেষ গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ফুল ঝরে যাচ্ছে বলে তিনি জানান। তবে বৃষ্টিতে পোকার আক্রমণ কমবে বলে তিনি আশাবাদ করেন।
একই এলাকার শিমচাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, এ বছর শিম চাষের সময়ে অনাবৃষ্টি, অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে গাছের ফুল দাঁড়াতে পারেনি। সর্বশেষ কয়েক দফা বৃষ্টিতে গাছে ফুল আসলেও চলতি সপ্তাহের বৃষ্টির কারণে অধিকাংশ গাছের ফুল ঝরে গেছে। নতুন ফুল না দাঁড়ানো পর্যন্ত ফলন বাড়বে না বলে তিনি জানান।
তবে শিমের ফলনের বিষয়ে আশার কথা জানিয়েছেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক (প্রশিক্ষণ) সুশান্ত কুমার তরফদার। তিনি বলেন, চলতি বৃষ্টিপাত শিমের ফলনে আপাতত কিছুটা হ্রাস পেলেও বৃষ্টি কমে গেলে ব্যাপক ফলনের আশা করা যাচ্ছে। তিনি বলেন, আগে শুধুমাত্র যশোর সদরে শিমের আবাদ হলেও এখন তা ছাপিয়ে পাশের উপজেলা মণিরামপুর ও কেশবপুরে ব্যাপকভাবে চাষ হচ্ছে।