ব্যাংক থেকে টাকা তোলার পর ১ লাখ নিয়ে গেলেন সভাপতি, থানায় অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের

0

বাঘারপাড়া (যশোর) সংবাদদাতা॥ যশোরের বাঘারপাড়ায় নারিকেলবাড়িয়া উচ্চ বহুমুখী বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি গিয়াসউদ্দিন হিরা ও প্রধান শিক্ষক এমদাদ হোসেন ব্যংক থেকে যৌথ স্বাক্ষরে ৩ লাখ টাকা উত্তোলন করে শাখা ম্যানেজারের কক্ষেই গণনা করতে থাকেন। ২ লাখ টাকা গণনা শেষ হলে ১লাখ টাকা গুণতে গুণতে কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান সভাপতি। এক পর্যায়ে প্রধান শিক্ষককে হুমকি দিয়ে বলেন, বিষয়টি কাউকে জানালে এ টাকা কোনো দিনই ফেরত পাবেন না। গত ১৮ সেপ্টেম্বার দুপুরে নারিকেলবাড়িয়া সোনালী ব্যংক শাখায় এ ঘটনা ঘটে। টাকা উদ্ধার ও তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে ওইদিন রাতে বাঘারপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, তিন মাস আগে নারিকেলবাড়িয়া বহুমুখি উচ্চ বিদ্যালয়ের নামে পিবিজিএসআই স্কিমের আওতায় পাঁচ লাখ টাকা সরকারি বরাদ্দ আসে। বরাদ্দের টাকা বিদ্যালয়ের ব্যাংক হিসাবে ছিল। গত ১৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে জমাকৃত ৫ লাখ টাকা থেকে ২ লাখ এবং বিদ্যালয়টির সাধারণ তহবিল থেকে ১ লাখ টাকা চেকের মাধ্যমে উত্তোলন করেন সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক। উত্তোলনের টাকা নারিকেলবাড়িয়া সোনালী ব্যাংক শাখা ম্যানেজারের কক্ষেই গণনা করতে বসেন দু’জন। এ সময় সভাপতি হিরার মোবাইল ফোনটি বেজে ওঠে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি তা রিসিভ করে কথা বলতে বলতে ১ লাখ টাকার বান্ডিলসহ ব্যাংকের বাইরে চলে যান। কিছু সময় পর প্রধান শিক্ষক এমদাদ হোসেন সভাপতি হিরাকে ফোন করেন। এ সময় তিনি জানান, পরে আসছি। এরপর আবাও ফোন করলে বলেন, একটা সালিশে আছি। এরপর সভাপতির ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
অভিযোগে প্রধান শিক্ষক আরও উল্লেখ করেছেন, কয়েক ঘন্টা পর বিদ্যালয়টির দপ্তরী আল-আমিনকে সভাপতির বাড়ি পাঠালে শুক্রবার টাকা দেয়া হবে জানিয়ে দেন। একই সাথে এ বিষয়টি কাউকে জানালে টাকা আর দেবেন না বলে জানিয়ে দেন এবং যা করতে পারে করতে পারে বলেও হুমকি দেন সভাপতি। বিদ্যালয়ে ফিরে এসে দপ্তরী আল আমিন বিষয়টি জানালে ৫টা ২০ মিনিটে সভাপতিকে আবারও ফোন করেন প্রধান শিক্ষক। এ সময় সভাপতি শুক্রবার টাকা দেবেন বলে জানিয়ে দেন এবং বলেন, কাউকে জানালে টাকা দেবো না, পারলে যা পারবেন করবেন। এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণে বাঘারপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন প্রধান শিক্ষক এমদাদ হোসেন।
গিয়াস উদ্দিন হিরা নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক ও নারিকেলবাড়িয়া কলেজের ক্রীড়া শিক্ষক। তিনি উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের আনসার আলী মোল্যার ছেলে। প্রধান শিক্ষক এমদাদ হোসেন নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
প্রধান শিক্ষক মো. এমদাদ হোসেন বলেন, কোনো উপায় না পেয়ে বিদ্যালয়ের টাকা উদ্ধারের জন্য সোমবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে থানায় অভিযোগ দিয়েছি। এখনও পর্যন্ত পুলিশ এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে কি না জানতে পারিনি। খুব যন্ত্রণার মধ্যে আছি।
এ ব্যাপারে মো. গিয়াস উদ্দিন হিরার মুঠোফোনে কয়েকবার কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহাদত হোসেন বলেন, এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিয়ষটি তদন্ত করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।