জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা দিতে এসে হামলার শিকার ছাত্রদল নেতা, প্রক্টর তুলে দিলেন পুলিশের হাতে

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) পরীক্ষা দিতে এসে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবু হেনা মুরসালিন। তিনি সমাজকর্ম বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বরে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মামলার বিষয় খতিয়ে দেখতে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পরীক্ষা শেষ করে ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার সময় একাধিক ছাত্রলীগের কর্মী বাঁশের লাঠি দিয়ে তার উপর হামলা চালায়। অভিযুক্তরা হলেন গণিত বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম হাসান, অ্যাকাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত, সমাজকর্ম বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হৃদয়। তারা সকলেই শাখা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক এসএম আক্তার হোসাইনের অনুসারী।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, মারধরের খবর পেয়ে আমি সহকারী প্রক্টরকে পাঠাই। সেখান থেকে ওই শিক্ষার্থীকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা আছে কিনা সেটা পুলিশ যাচাই করে কোন মামলা না পাওয়ায় আমরা তাকে ছেড়ে দেয়ার সুপারিশ করি।
রাজনৈতিক কারণে কোনো শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসে এভাবে মারধর করতে পারে কি-না তা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এ ক্যাম্পাস সকলের। এভাবে কেউ কাউকে মারধর করতে পারে না।
ওই শিক্ষার্থী যদি কোন অভিযোগ করে তাহলে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।

সদরঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই (উপপরিদর্শক) হাসান মাতবর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আমার কাছে বুঝিয়ে দেয়। আমি তাকে আমার হেফাজতে রেখেছি। কি করতে হবে প্রক্টর পরে সিদ্ধান্ত দেবেন।
জবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম আকতার হোসাইন বলেন, ক্যাম্পাসে কোন মারধর বা হামলার ঘটনা ঘটলে তা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা নিবে। শিক্ষার্থীদের অভ্যন্তরীণ কোন দ্বন্দের দায় ছাত্রলীগ নিবে না।
হামলার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসলাম বলেন, পরীক্ষা দিতে এসে আমাদের কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কতিপয় ছাত্রলীগকর্মী দ্বারা আহত হলো। এর আগেও কয়েকজনকে পরীক্ষার হলে গিয়ে মেরে আহত করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত ছিল হামলাকারীদের ধরে পুলিশে দেয়া। তারা তো তা করেইনি, উল্টো হামলায় আহত হওয়া শিক্ষার্থীকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে তারা বেআইনি এবং বিমাতাসূলভ আচরণ করেছেন। আমরা হমলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রাজিনা সুলতানা বলেন, মোরসালিন তার মিডটার্ম পরীক্ষা দিয়ে বের হওয়ার পরেই হামলার শিকার হয়। আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের সাথে যোগাযোগ করেছি। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলেছি।

এর আগে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাহিদ হাসান ও বাংলা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ইমরান হাসান ইমনকে মারধর করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এদিন গণিত বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম হাসানের নেতৃত্বে ইমরান হাসান ইমনের মারধর করে আইফোন ও মানিব্যাগ কেড়ে নেন। মোবাইল ফোন ফেরত চাইলে পুনরায় মারধরের হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইমরান ইমন। এবিষয়ে প্রক্টর বলেন, এধরনের কোন অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবো।