ঢাকুরিয়া কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নিয়োগ দেওয়ার নামে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

0

স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর (যশোর)॥ মনিরামপুরে ঢাকুরিয়া কলেজে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের নামে ৭ ব্যক্তির কাছ থেকে প্রতারণা করে প্রায় অর্ধকোটি টাকা আদায়ের পর আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। আর এ অভিযোগ রয়েছে কলেজের অধ্যক্ষ তাপস কুমার কুন্ডুর বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে ভুক্তভোগীদের পক্ষে মফিজুর রহমান নামে এক ব্যক্তি জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনে গত বৃহস্পতিবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
জানা যায়, ঢাকুরিয়া কলেজ ২০০২ সালে অনুমোদনপ্রাপ্ত হয়ে ২০২২ সালে এমপিওভুক্ত হয়। অভিযোগ রয়েছে অধ্যক্ষ তাপস কুমার কুন্ডু গত বছর ইসলামের ইতিহাস বিভাগে প্রভাষক পদে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যশোর সদর উপজেলার শাখারগাতী গ্রামের আবুল হোসেনের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা গ্রহণ করেন। কিন্তু তাকে এখনও নিয়োগ দেওয়া হয়নি। অপরদিকে মাগুরা জেলার মৃগঙ্গ বিশ্বাসকে সমাজ কল্যাণ বিভাগে প্রভাষক পদে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০১৪ সালে অধ্যক্ষ তার কাছ থেকে পাঁচ লাখ ৯০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন। সেই থেকে মৃগঙ্গ বিশ্বাস কলেজে নিয়মিত ক্লাশ নিয়ে আসছিলেন। কিন্তু তাকেও নিয়োগপত্র দেওয়া হয়নি। আবার ২০১১ সালে অর্থনীতি বিভাগে প্রভাষক পদে ঝিকরগাছা উপজেলার বিমল কুমার রায়কে চাকরি দিয়ে তার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা গ্রহণ করা হয়। কিন্তু বিমল রায়ের অভিযোগ ২০২২ সালে এমপিওভুক্তির জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে যে তালিকা পাঠানো হয় সেই তালিকায় তার নামটি পাঠানো হয়নি। উপরোন্ত অধ্যক্ষ তাপস কুন্ডু বিমল রায়ের পরিবর্তে এনামুল হক নামে অন্য এক ব্যক্তির কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা উৎকোচ নিয়ে তাকে নিয়োগের ষড়যন্ত্র করছেন।
অন্যদিকে ২০১১ সালে ইসলামের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে মাগুরা জেলার সঞ্জিবন নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে অগ্রিম বাবদ দুই লাখ ৭০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন। কিন্তু তাকেও নিয়োগপত্র দেওয়া হয়নি। এছাড়াও ইতিহাস বিভাগে একজন প্রভাষক এবং চতুর্থ শ্রেণির একজন কর্মচারী নিয়োগের নামে অনুরুপভাবে অধ্যক্ষ তাপস কু-ু আরও দুই ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকা গ্রহণ করেন। কিন্তু তাদের এখনও নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ফলে সব ভুক্তভোগী অধ্যক্ষের কাছ থেকে টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন।
সর্বশেষ মফিজুর রহমান নামে অপর এক ব্যক্তি ভুক্তভোগীদের পক্ষে গত বৃহস্পতিবার যশোর জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। ভুক্তভোগী আবুল হোসেন জানান, নিয়োগপত্রের জন্য বার বার চাপ প্রয়োগ করা হলে অধ্যক্ষ তাপস কুমার কুন্ডু তাকে একটি নিয়োগপত্র সরবরাহ করেন। কিন্তু যাচাই বাছাইয়ের পর দেখা যায় সে নিয়োগপত্রটি ভুয়া। ফলে তিনি এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে গভর্নিংবডির সভাপতির কাছে আবেদন করেন। কিন্তু সভাপতি কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। তবে অধ্যক্ষ তাপস কুমার কুন্ডু নিয়োগের নামে টাকা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, ইতোমধ্যে অভিযোগ করা ওই শিক্ষকরা অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করছেন। অন্যদিকে গভর্নিংবডির সভাপতি অসিত মজুমদার রাম জানান, তিনি সভাপতি হয়েছেন চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে। এ ধরনের কয়েকটি অভিযোগ পাবার সত্যতা স্বীকার করে সভাপতি জানান, এ ব্যাপারে অধ্যক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন।