সরকার নির্ধারিত মূল্য মানেনি ব্যবসায়ীরা বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে চিনি ও সয়াবিন

0

শেখ আব্দুল্লাহ হুসাইন॥ সরকারের নির্ধারণ করা মূল্যকে উপেক্ষা করে ব্যবসায়ীরা বহাল তবিয়তে উচ্চমূল্যে নিত্যপণ্য বিক্রি অব্যাহত রেখেছেন। বিশেষ করে চিনি ও সয়াবিন তেলের দাম বাজারে এখনও কমেনি। তাছাড়া কাঁচা মরিচ আমদানির পরও এখনও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতাদের অভিযোগ বাজার তদারকি প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনও নজরদারি নেই। তাদের অবহেলার সুযোগ নিচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা।  শুক্রবার (১৪ জুলাই) যশোরের বড়বাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া যায়।
সরকার খোলা চিনি প্রতি কেজি ১২০ টাকা খুচরা মূল্য নির্ধারণ করেছে। অথচ বাজারে কোথাও এই দামে চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। দোকানিরা ১৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন পাইকারি বাজারে চিনির দাম বেশি। এ কারণে তাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
বোতলজাত সয়াবিন তেলও সরকার গত বুধবার থেকে প্রতি লিটার ১৭৯ টাকা খুচরা মূল্য নির্ধারণ করেছে। কিন্তু বাজারে এই দামের কোনও বোতলই খুঁজে পাওয়া যায়নি। শুক্রবারও দোকানিদের আগের দামে ১৮৯ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। দোকানিরা বলছেন সরকারের নির্ধারণ করা বোতলজাত সয়াবিন তেল এখনও বাজারে আসেনি।
তবে, বড়বাজারে খোলা সয়াবিন তেল, পাম তেল ও সুপার পাম তেলের কেজিতে ১০ টাকা কমে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। খুচরা বিক্রেতা রবি ব্যানার্জি জানান, তিনি শুক্রবার খোলা সয়াবিন তেল প্রতি কেজি ১৭০ টাকা, পাম তেল ১৩৫ টাকা, সুপার পাম তেল ১৪০ দরে বিক্রি করেছেন।
এদিকে বড়বাজারে আবারও চড়া দামে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে। শুক্রবার দেশি ঝিয়া ও আমদানি করা ভারতীয় কাঁচা মরিচ ৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। ঈদুল আজহার বন্ধের পর ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি হয়ে আসায় দুয়েক দিন বাজারে কাঁচা মরিচের কেজি ২০০ টাকায় নেমে এসেছিল। সে সময় মজুত করা কাঁচা মরিচ ব্যবসায়ীরা অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। তবে ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট কৌশলে আবারও সোজা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন।
বড়বাজারে সবজির দাম এখনও আকাশচুম্বি। শুক্রবার বিক্রেতা নাসির আলীকে ভালো মানের করোলা প্রতি কেজি ১০০ টাকা, উচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, বেগুন ১০০ থেকে ১২০ টাকা, টমেটো ১৬০ টাকা, গাজর ১৪০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা যায়। বড়বাজারে পাইকারি সবজি বিক্রেতা ‘মনিরামপুর ভা-ারের’ অন্যতম স্বত্বাধিকারী জহিরুদ্দিন কাজল জানান, সাম্প্রতিক সময়ে তীব্র খরায় চাষির সবজি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে ফলন কম হয়েছে। তাছাড়া আশপাশের অঞ্চল থেকে চাষিরা বেশি দামের আশায় তাদের উৎপাদিত পণ্য রাজধানী ঢাকাসহ অন্যান্য জেলায় বিক্রি করতে নিয়ে যাচ্ছেন। এসব কারণে সরবরাহ কমে যশোরে সবজির দাম বেশি।
বড়বাজারে ক্রেতা আব্দুল কাদের জানান, ‘সরকারের যে বাজার তদারকি প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, তারা এক প্রকার নিষ্ক্রিয়। সরকার মূল্য নির্ধারণ করার পরও সরকারি সংস্থাগুলোর বাজার নিয়ন্ত্রণে কেন তৎপরতা নেই তা বোধোগম্য হচ্ছে না।’