নাগালের বাইরে মসলার বাজার

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে সাধারনত শেষ সময়ে মসলার দোকানে ক্রেতাদের ভিড় দেখা যায়। প্রায় প্রতিটি পরিবারই তাদের পছন্দমতো মসলা কিনে নিয়ে যান। তবে এ বছর একেবারেই ভিন্ন চিত্র। কত কয়েকদিনে মসলার বাজারে যেনো আগুন লেগেছে। এজন্য যশোরে ক্রেতা থাকলেও কেনাকাটা কম হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
মঙ্গলবার (২৭ জুন) যশোরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা বাজারে জিরা বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১০৫০ টাকা কেজি। অথচ গত ঈদে এই জিরার দাম ছিলো ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। ক্রেতারা জানান, মসলার উর্ধ্বমুখি এ দামে বেশি ভোগাচ্ছে নি¤œ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষকে। পুরোটাই এই দুই শ্রেণীর মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বাজার তদারকির অভাবেই ঈদকে সামনে রেখে হু হু করে বেড়েছে এসব পণ্যের দাম।
ব্যবসায়ীরা জানান, গত দুই মাসের ব্যবধানে কিছু কিছু মসলার দাম দুই থেকে তিনগুণ পর্যন্ত বেড়েছে। আর এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে পাঁচগুণ। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ভালো মানের জিরা ও আদার দাম। এছাড়া রসুন, হলুদ, মরিচ, লবঙ্গ, দারুচিনি, এলাচসহ অন্য মসলার দামও বর্তমানে চড়া রয়েছে।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর তথ্যমতে, ২০২২ সালের জুনে প্রতি কেজি জিরা সর্বনিম্ন ৩৮০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৪৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর ওই সময়ে আমদানি করা আদা মান ভেদে কেজিপ্রতি ৬০-১০০ টাকায় এবং দেশি আদা ১২০-১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অর্থাৎ বছর ব্যবধানে আদার দাম তিন থেকে পাঁচগুণ বেড়েছে। বর্তমান বাজারে আদার দাম ৩৭০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি। আর হাজার টাকা ছাড়িয়ে গেছে জিরার দাম। গত মাসে লবঙ্গের দাম ছিল প্রতিকেজি ১৪০০ টাকা। আবার এক মাসের ব্যবধানে এলাচের দাম প্রতি কেজিতে প্রায় ১০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৬০০ থেকে দুই হাজার টাকায়। এছাড়া প্রতিকেজি গোলমরিচ ৭০০-৭৫০ টাকায়, দারুচিনি ৪৫০ টাকা এবং ধনিয়া ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
যশোর বড়বাজারের মুদি দোকানি শাহাজান আলী বলেন, ঈদের আগে অনেকেই মসলা কিনতে আসছেন। কিন্তু কিনছেন পরিমাণে কম। এজন্য মসলার বাজার যে জমজমাট তা বলা যাবে না।
খুচরা ব্যবসায়ীরারা জানান, মসলা আমদানি নির্ভর হওয়ায় ডলার সংকটের প্রভাবে দাম বেড়েছে। তাদের মতে এ পরিস্থিতিতে ক্রেতারা যেমন ক্ষতির মুখে পড়ছেন ঠিক তেমনি তারাও এ পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন।
এদিকে মসলার বাজারে এসে অনেক ক্রেতায় হতাশ হচ্ছেন। দাম বেশি হওয়ায় চাহিদা অনুযায়ী মসলা না কিনেই ফিরে যাচ্ছেন তারা। আলতাফ হোসেন নামে এক ক্রেতা বলেন, বাসা থেকে তাকে এক কেজি আদা কিনে নিয়ে যেতে বললেও দাম বেশি হওয়ায় আদা কেজি আদা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। অন্যান্য মসলার ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। তার মতে বাজারে যারা আসছেন তাদের অধিকাংশই কাটছাট করে মসলা কিনছেন।