যশোরে কারখানা মালিকের কাছে চাঁদা দাবি ছাত্রলীগ নেতা রবিউলসহ ১০জন কারাগারে

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর শহরতলীর ঝুমঝুমপুরে বিসিকের আনোয়ার জুট প্রোডাক্টস ও সিটি ফ্লাওয়ার মিলস মালিক আনোয়ার হোসেনের কাছে চাঁদা দাবি, প্রতিষ্ঠানে হামলা ও কর্মচারীদের মারধর করা হয়েছে। এই অভিযোগে আটক সদর উপজেলার ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির আহ্বায়ক রবিউল ইসলামসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে গত শনিবার রাতে কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। কারখানা মালিক আনোয়ার হোসেন এই মামলা করেছেন। পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা রবিউল ইসলামসহ ১০ জনকে রোববার (২৫ জুন) আদালতে সোপর্দ করে। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার দালাল তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
আটকরা হলেন, সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা মান্দারতলা এলাকার আকরাম হোসেনের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা রবিউল ইসলাম, শাহজাহান মোল্লার ছেলে মো. বাদশা ও কামরুল, আলমগীর হোসেনের ছেলে সুজন, মোশারফ হোসেনের ছেলে ইমদাদ, আলী আহমেদের ছেলে উজ্জল হোসেন, হাকিম মোল্লার ছেলে আবু কালাম, ইকরাম মোল্লার ছেলে মেহেদী হাসান, সীতারামপুর গ্রামের সোবহানের ছেলে রাহাত হোসেন ও শাহ আলমের ছেলে শাহাবুদ্দিন কাজল।
কোতয়ালি থানা পুলিশের ইনসপেক্টর (তদন্ত) এ কে এম সফিকুল আলম চৌধুরী জানান, চাঁদাবাজি ও মারধরের ঘটনায় গত শনিবার রাতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তারা ২৪ জনকে আটক করেছিলেন। এর মধ্যে ১৪ জনের বিরুদ্ধে ঘটনার সাথে কোনও সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় পরে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তিনি আরও জানান, কারখানা মালিক আনোয়ার হোসেন আটক ১০ জনসহ ১২ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন।
পুলিশ জানায়, আটক ওই ১০ জন ছাড়া মামলার অপর দুই আসামি হলেন, বালিয়াডাঙ্গা মান্দারতলার সাহেব ওলিয়ারের ছেলে ময়না ও ঝুমঝুমপুরের সালাউদ্দিনের ছেলে বাপ্পি হোসেন।
কারখানা মালিক আনোয়ার হোসেনের অভিযোগ, আসামি রবিউল ইসলাম তার কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তাকে হুমকি দিয়ে বলা হয়, এখানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চালাতে হলে চাঁদা দিতে হবে। গত শনিবার দুপুর ১টার দিকে তিনিসহ তার শ্যালক নয়ন এবং প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী মিলন, জসিম, ও বাপ্পি ঝুমঝুমপুরস্থ নিজাম ফুডের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় আসামিরা তাদের ওপর চড়াও হন এবং তার কাছে দাবিকৃত ৫ লাখ টাকা চাঁদা দিতে বলেন। তখন আনোয়ার হোসেন তাদের চাঁদা দিতে অস্বীকার করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তার সাথে থাকা কর্মচারী মিলনের মাথায় চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কোপ মারেন আসামি রবিউল ইসলাম। এর পরপরই রবিউল ইসলামের সহযোগী বাদশা লোহার রড দিয়ে মিলনকে মারধর করেন। আরেক সহযোগী ময়না হাসুয়া দিয়ে তাকে কোপ মারলে মিলন গুরুতর জখম হন। এছাড়া আসামিরা আনোয়ার হোসেনের শ্যালক নয়ন এবং কর্মচারী বাপ্পিকে মারধর করলে তারা দুজনই জখম হন। এরপর আসামিরা চাঁদার দাবিতে আনোয়ার হোসেনের আনোয়ার জুট প্রোডাক্টস ও সিটি ফ্লাওয়ার মিলসে তালা লাগিয়ে দেন।
কারখানা মালিক আনোয়ার হোসেনের মামাতো ভাই মোহাম্মদ সেলিম জানান, বিসিকের মিজান ফুডের মালিক মিজানুর রহমানের কাছে তার ভাই আনোয়ার হোসেন ২ লাখ ৬০ টাকা পাবেন। এই পাওনা টাকা চাওয়ায় মিজানুর রহমান মোবাইল ফোন করে আসামিদের ডেকে এনেছিলেন। পরবর্তীতে আসামিরা আনোয়ার হোসেনের কাছে চাঁদা দাবি, কর্মচারীদের মারধর ও পিস্তল উঁচিয়ে হত্যার হুমকি এবং তাদের দুটি কারখানায় তালা লাগিয়ে দিয়েছিলেন। পরে পুলিশ এসে অভিযান চালিয়ে আসামিদের ধরে নিয়ে যায়।