বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞার পরই বিমানবন্দরে গ্রেফতার আ.লীগ নেতা আবুল কাশেম

0

 

লোকসমাজ ডেস্ক॥ অর্থ পাচারের এক মামলায় বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মাথায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রেফতার হয়েছেন প্রস্তাবিত পিপলস ব্যাংকের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাশেম।
যুক্তরাষ্ট্রে পালানোর সময় বুধবার মধ্যরাতে বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটক করে বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির ফাইনান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান জানান।
তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার সকালে সিআইডির কাছে আবুল কাশেমকে বুঝিয়ে দিয়েছে ইমিগ্রেশন পুলিশ। এরপর রিমান্ড চেয়ে তাকে আদালতে পাঠানো হলে শুনানির জন্য ২৫ জুন তারিখ রাখেন বিচারক। একই সঙ্গে আবুল কাশেমকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।”
অর্থ পাচারের মামলায় বুধবার ই-কমার্স কোম্পানি আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর আলম শিকদারসহ যে চারজনের বিদেশযাত্রায় আদালত নিষেধাজ্ঞা দেয় তাদেরই একজন আবুল কাশেম। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অন্যতম সহ-সভাপতি তিনি।
এ মামলার একটি অভিযোগে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত পিপলস ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালকের পদ পাওয়ার জন্য এবং শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে হাজারো গ্রাহকের কাছ থেকে নেওয়া একশ কোটি টাকা মঞ্জুর আলম ওই ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবুল কাশেমকে দিয়েছিলেন।
দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা পাওয়া বাকি দুজন হলেন, আলেশা মার্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মঞ্জুর আলমের স্ত্রী সাদিয়া চৌধুরী এবং আলেশা মার্টকে মোটরসাইকেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এস কে ট্রেডার্সের মালিক মো. আল মামুন। আবুল কাশেম গ্রেফতার হলেও অন্যরা পলাতক রয়েছেন।
তদন্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামানের এক আবেদনে বুধবার ওই চারজনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারির পাশাপাশি তাদের সম্পত্তি অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দেয় আদালত। কয়েক ঘণ্টা পর রাতেই বিমানবন্দরে আটক হন আবুল কাশেম।
পরিদর্শক মনিরুজ্জামান বলেন, মামলার পর ওই চারজন যেন দেশ ত্যাগ করতে না পারে সেজন্য বিমানবন্দরসহ সংশ্লিষ্ট জায়গায় তথ্য পাঠানো হয়। আর এ তথ্যের ভিত্তিতেই শাহজালাল আন্তজাতিক বিমানবন্দর দিয়ে বুধবার মধ্যরাতে আমেরিকা যাওয়ার সময়ে আবুল কাশেমকে ইমিগ্রেশন পুলিশ আটক করে।
প্রতারণার শিকার প্রায় ৩ হাজার গ্রাহকের আবেদনের ভিত্তিতে তদন্তে প্রমাণ মেলায় গত ৩১ মে এই চারজনসহ অজ্ঞাত ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা করেন সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার আল মামুন।
তিনি বলেন, এই চারজন ছাড়াও প্রতিষ্ঠান হিসাবে আলেশা মার্ট লিমিটেড, আলেশা হোল্ডিং লিমিটেড, আলেশা কার্ড লিমিটেড, আলেশা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সার্ভিস লিমিটিড, আলেশা টেক লিমিটেড, অলেশা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড, আলেশা রাইড লিমিটেড, আলেশা এক্সপোর্ট ইমপোর্ট লিমিটেড, আলেশা ফার্মেসি লিমিটেড, আলেশা অ্যাগ্রো লিমিটেডের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে।
“তারা বিভিন্ন অফার দিয়ে বহু গ্রাহকের কাছ থেকে মোটরসাইকেল ও ইলেক্ট্রনিক বিভিন্ন পণ্য সরবরাহের জন্য অগ্রিম অর্থ নিয়ে পণ্য বা টাকা ফেরত না দিয়ে ই-কমার্স ব্যবসার আড়ালে প্রতারণার মাধ্যমে মানিলন্ডারিং অপরাধ করছে।”
মামলার অন্য তিন আসামির খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, “তাদের প্রায় সকল প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় এবং তাদের ঠিকানায় অবস্থান না করায় তাদের পাওয়া যাচ্ছে না।”