মণিরামপুরে কুরবানি ঈদকে সামনে রেখে দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত খামারিরা

0

ওসমান গণি. রাজগঞ্জ (যশোর) ॥ কুরবানি ঈদকে সামনে রেখে যশোরের মণিরামপুর উপজেলায় খামারিরা গবাদিপশু পালনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ বছর দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করছেন খামারিরা।
উপজেলার মশ্মিমনগর ইউনিয়নের রামপুর, চালুয়াহাটি ইউনিয়নের মোবারকপুর ও ঝাঁপা ইউনিয়নের চন্ডিপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, খামারিরা গরু-ছাগলের পরিচর্যা নিয়ে খুবই ব্যস্ত রয়েছেন। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতর সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলার একটি পৌরসভাসহ ১৭টি ইউনিয়নে ব্যক্তিগত ব্যবসায়িক মিলিয়ে ৫হাজার ৯৮৭টি গরু ও ছাগলের খামার রয়েছে। এরমধ্যে কুরবানির জন্য গরু ও ছাগল প্রস্তুুত ৯হাজার ৬১৭টি। যা গত বছরের চেয়ে ৬১৭টি বেশি।
ঝাঁপা ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামের খামারি মিলন হোসেন জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরে কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে গরু ও ছাগল লালন-পালন করে আসছি। প্রত্যেক বছর কুরবানি ঈদের ৬ থেকে ৭ মাস আগে বিভিন্ন হাট-বাজার থেকে দেশীয় জাতের গরু সংগ্রহ করি। ওই গরুগুলো দেশীয় পদ্ধতিতে মোটাতাজাকরণ করি।’ এ বছর তার খামারের ৬টি গরু প্রস্তুুত করেছেন কুরবানির জন্য। তবে এবার গো-খাদ্যের দাম যে হারে বেড়েছে তাতে করে বেশি দামে গরু বিক্রি করতে না পারলে লোকসান গুণতে হবে।
চালুয়াহাটি ইউনিয়নের মোবারকপুর গ্রামের খামারি ইমরান খান পান্না জানান, এ বছর তার খামারে ৩৬টি গরু রয়েছে। এদের মধ্যে থেকে ২২টি গরু কুরবানির জন্য দেশীয় পদ্ধতিতে প্রস্তুুত করা হয়েছে। বড় গরুগুলোর প্রতিটার দাম চাওয়া হচ্ছে ৮ থেকে ৯ লাখ টাকা এবং একটু ছোটগুলোর সর্বনিম্ন দাম ধরা হয়েছে ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা। তবে এ খামারির অভিযোগ, দেশের বাইরে থেকে যদি গরু আনা হয় সেক্ষেত্রে তাদের মত অনেক খামারিরাই মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
বৃহত্তর খামারি মশ্মিমনগর ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম জানান, তার খামরারে কুরবানি ঈদকে সামনে রেখে ১৩৬টি গরু প্রস্তুুত করা হচ্ছে। এরমধ্যে থেকে প্রায় ৪০টি গরু রাজধানী ঢাকায় নেওয়া হবে বিক্রির জন্য। যার প্রতিটির দাম পড়বে ৩ থেকে সাড়ে ৩লাখ টাকা। বাকি গরুগুলো স্থানীয় ও জেলা পর্যায়ের হাটে বিক্রি করা হবে। যার প্রতিটার দাম পড়বে ১ থেকে দেড় লাখ টাকা। এ বছর খো-খাদ্যের যে দাম তাতে করে বেশি দামে গরু বিক্রি না করতে পারলে অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে বলে জানান খামার মালিক।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা পার্থ প্রতিম রায় জানান, এ বছর কুরবানি ঈদের জন্য প্রায় সাড়ে ৮ হাজার পশুর চাহিদা রয়েছে। সেখানে ৯হাজারের বেশি পশু এবারের ঈদের জন্য প্রস্তুুত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের পক্ষ থেকে ছোট-বড় খামারিদের যাবতীয় তথ্য পরামর্শ ভ্যাকসিন এবং চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়েছে। খামারিদের সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে ঘাস খড়ের পাশাপাশি খৈল ও ভূসি খাওয়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এবছর সাধারণ মানুষের চাহিদা পূরণ করেও পশু উদ্বৃত্ত থাকবে এবং খামারিরা ন্যায্যমূল্য পাবেন বলে জানান এ কর্মকর্তা।