সমতলভূমিতে কাজু বাদাম চাষ করে চৌগাছার চাষি মাহাবুবের সফলতা

0

এম.এ.রহিম, চৌগাছা (যশোর) ॥ চৌগাছায় কাজু বাদাম চাষ করে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন মাহাবুবুর রহমান। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বৃক্ষ জাতীয় ফলের মধ্যে এর স্থান তৃতীয় আর বাদাম জাতীয় ফসলে প্রথম স্থানে রয়েছে। পুষ্টিগুণের বিবেচনায় এ বাদামকে সুপারফুড বলা হয়। পাহাড়ি অঞ্চলের বৃক্ষ জাতীয় ফসল চৌগাছায় পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করে ব্যাপক সম্ভাবনাময় বলে মনে করছেন উপজেলা কৃষি বিভাগ। আগামীতে এটি হতে পারে উপজেলার অন্যতম লাভজন ফসল। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের চেষ্টায় এক বছরে সার ও কীটনাশকবিহীন পাহাড়ি অঞ্চলের অর্থকরী ফসল কাজুবাদাম চৌগাছার সমতলভূমিতে উৎপাদন হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, সমতলভূমিতে কাজু বাদাম ও কফি চাষ প্রকল্পের আওতায় কাজু বাদাম চাষে সফলতা পাওয়া গেছে। যে কারণে এখন ব্যাপক ভিত্তিতে বাণিজ্যিকভাবে কৃষকদের কাজু বাদাম চাষে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। উপজেলার পাতিবিলা গ্রামের যুবক মাহাবুব এবছর বাণিজ্যিকভাবে কাজু বাদাম চাষ করবেন বলে জানান। তিনি জানান, গাছগুলোর বয়স দুই বছর হয়েছে। দুই বছর আগে উপজেলা কৃষি অফিস পরীক্ষামূলকভাবে তাকে বিনামূল্যে গাছের চারাগুলো দেয়। বর্তমানে তার ক্ষেতে ৩৩টি কাজু বাদাম গাছ রয়েছে। প্রতিটি গাছেই ফুল ও ফল এসেছে। এর মধ্যে কয়েকটি গাছে ফল এসেছে যা ৫ থেকে ৬ কেজি বাদাম হবে বলে আশা করছেন তিনি। যার বর্তমান বাজার মূল্য ৭/৮ হাজার টাকা। মাহবুব জানান, কাজুবাদাম চাষে তার অতিরিক্ত কোনো সার, পানি বা কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়নি।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মুক্তার হোসেন জানান, কাজুবাদাম মূলত পাহাড়ি ফসল। সমতলভূমিতে কাজু বাদাম ও কফি চাষ প্রকল্পের আওতায় ২০২১ সালের আগস্ট মাসে উপজেলার দুইজন চাষিকে কাজু বাদামের চারা দেওয়া হয়। এরপর ভারী বৃষ্টিপাতে গাছগুলো নষ্ট হয়ে যায়। পরে মাহাবুবুর রহমানকে উপজেলা কৃষি অফিসে থাকা ৩০ টি কাজু বাদামের চারা দেওয়া হয়। তিনি নিজের দুই বিঘা পেয়ারা বাগানের চারপাশে নিরাপত্তা বেড়া হিসেবে গাছগুলো রোপণ করেন। গাছগুলোতে গত বছরই ফুল আসে। তবে চলতি মৌসুমে বেশ কয়েকটি গাছে ফল এসেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুসাব্বির হুসাইন বলেন, পাহাড়ি ফসল কাজু বাদাম সমতলভূমিতে উৎপাদনের লক্ষ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর প্রকল্পের আওতায় ২০২১ সালে যশোরের চৌগাছা ও ঝিকরগাছা উপজেলায় কাজু বাদামের গাছ প্রণোদনা হিসেবে দেওয়া হয়। এতেই সফলতা এসেছে। তিনি বলেন, এটি বেশ লাভজনক ফসল। বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করা সম্ভব হলে এটি স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরণ করে রফতানি করা যেতে পারে।