বাড়িতে লেদ মেশিনে তৈরি করতো পিস্তল, আটক ১

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥  এবার যশোর শহরের শংকরপুর চোপদারপাড়া বারেক পল্লীতে মিললো অস্ত্রের কারাখানা। সোমবার (২৭ মার্চ )রাতে সেখানে অভিযান চালিয়ে ১টি রিভলবার, অসম্পূর্ণ ১টি ওয়ান শ্যুটারগান, ৫ রাউন্ড গুলিসহ অস্ত্র তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করে ডিবি পুলিশ। এ সময় অস্ত্র তৈরির কারিগর শাহাদত হোসেন ওরফে বয়রা শাহাদতকে (৪০) আটক করা হয়েছে।
যশোরে এর আগে অবৈধ অস্ত্র তৈরির ৩টি কারখানা আবিষ্কার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কিন্তু ক্রেতা কারা এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বরাবরই অজ্ঞতা প্রকাশ করে আসছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো কোনো সদস্য এই অবৈধ অস্ত্রের ক্রেতা বলে আটক কারিগররা দাবি করলেও রহস্যজনক কারণে তারা অধরাই থেকে যাচ্ছেন।
ডিবি পুলিশের এসআই শাহিনুর রহমান জানান, বেশ কিছুদিন আগে গোপনে জানতে পারেন, বয়রা শাহাদত নামে এক ব্যক্তি অবৈধ অস্ত্র তৈরি করে থাকেন। এই তথ্য পেয়ে বয়রা শাহাদতের সন্ধান করতে থাকেন। এক পর্যায়ে জানতে পারেন, শংকরপুর চোপদারপাড়ার শাজাহান দেওয়ানের ছেলে বয়রা শাহাদত। নিজ বাড়িতে লেদ মেশিন বসিয়ে গোপনে অস্ত্র তৈরি করে আসছেন। নিশ্চিত হওয়ার পর গত সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনিসহ এসআই নুর ইসলাম ওই বাড়িতে অভিযান চালান। এ সময় দরজা বন্ধ করে নিজ ঘরের ভেতর লেদ মেশিনে অস্ত্র তৈরি করছিলেন শাহাদত। সাথে সাথে তাকে আটক এবং তার ঘরে তল্লাশি চালিয়ে কাঠের বাটযুক্ত ১টি রিভলবার, ৪ রাউন্ড রিভলবারের গুলি, ১ রাউন্ড ওয়ানশ্যুটারের গুলি, অসম্পূর্ণ ১টি ওয়ান শ্যুটারগান, পিস্তল তৈরির স্টিলের ১টি ফর্মা উদ্ধার করা হয়। া তার লেদ মেশিন জব্দ করা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিবি পুলিশের ওই কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক শাহাদত অবৈধ অস্ত্র ও গুলি তৈরির কথা স্বীকার করেছেন। ৩ মাস ধরে অস্ত্র-গুলি তৈরি করছিলেন শাহাদত। তবে ক্রেতা কারা এ বিষয়ে মুখ খোলেন নি শাহাদত। ধারনা করা হচ্ছে, অস্ত্র তৈরি করে গোপনে দেশের বিভিন্ন স্থানের সন্ত্রাসীদের কাছে বিক্রি করে থাকেন শাহাদত।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অস্ত্র-গুলি তৈরির ঘটনায় আটক কারিগর শাহাদতের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা করেছে ডিবি পুলিশ। মঙ্গলবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এরআগে গত বছর শহরের আর এন রোড সংলগ্ন রাঙ্গামাটি গ্যারেজ এলাকার একটি লেদ কারখানায় অস্ত্র তৈরিকালে কারিগর আজিজুলসহ ৩ জন এবং সদর উপজেলার ভাতুড়িয়া গ্রাম থেকে অস্ত্র তৈরির সরঞ্জামসহ ইকবাল নামে আরেক কারিগরকে আটক করে ডিবি পুলিশ। পৃথক এই অভিযানে সরঞ্জামসহ কারিগররা ধরা পড়লেও এসব অবৈধ অস্ত্রের ক্রেতা আসলে কারা সেই বিষয়ে ডিবি পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, দেশের বিভিন্ন স্থানের সন্ত্রাসীরাই এর ক্রেতা। কিন্তু এসব ক্রেতাকে শনাক্ত ও আটকসহ অস্ত্র উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি কখনো।