লস প্রজেক্ট: রমজানে এক অনুকরণীয় উদ্যোগ

0

মাসুদ রানা বাবু ॥ দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে উচ্চবিত্তের নাভিঃশ্বাস হওয়ার উপক্রম। সেখানে মধ্যবিত্তের অবস্থা বর্ণনাতীত। এমন পরিস্থিতিতে পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে যশোরের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আইডিয়া সমাজকল্যাণ সংস্থা সাধারণ মানুষের কষ্ট লাঘবে এগিয়ে এসেছে। অর্ধেক দামে রমজান মাস জুড়ে ৯টি ভোগ্যপণ্য বিক্রি করবে প্রতিষ্ঠানটি। তাদের এই কার্যক্রমে যুক্ত হয়েছে সানাবিল নামের অপর একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান। এ কার্যক্রমের নাম দেয়া হয়েছে আইডিয়া-সানাবিল লস প্রজেক্ট। উদ্যোক্তাদের দেয়া কার্ডধারী মোট ৫৩৭টি পরিবার এ সুবিধা পাবে।
বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ ) থেকে খড়কি শাহ আব্দুল করিম রোডের আইডিয়া সমাজকল্যাণ সংস্থাটির কার্যালয়ে পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তারা বাজার থেকে যে দামে পণ্য কিনবেন তা অর্ধেক দামে বিক্রি করবেন। এ জন্য এ কর্মকান্ডের নাম দেয়া হয়েছে লস প্রজেক্ট। দুর্মূল্যের এই সময়ে অভাবী মানুষের সুবিধার্থে এ উদ্যোগ বলে জানান আইডিয়া সমাজকল্যাণ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হামিদুল হক। মহামারী করোনাকালীন সময়েও তারা এ উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
৯টি পণ্যের মধ্যে রয়েছে চাল, ডাল, তেল, চিনি, খেজুর, চিড়া, আলু, পেঁঁয়াজ ও ছোলা। এরমধ্যে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১২০ টাকা, প্রতিকেজি চাল ২৫ টাকা সর্বোচ্চ ৫ কেজি, আলু ১০ টাকা সর্বোচ্চ ২ কেজি, প্রতি কেজি মসুর ডাল ৪০ টাকা, চিনি ৪৫ টাকা, পেঁয়াজ ২০ টাকা, ছোলা ৬০ টাকা, চিড়া ২০টাকা, খেজুর ১০০ টাকা- এই হিসেবে ৯টি নিত্যপণ্য ৫৫০ টাকায় নিতে পারবেন ক্রেতারা। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ১ হাজার ৩০০ টাকা। প্রতি সপ্তাহে একবার কার্ডধারী ৫৩৭ জন ক্রেতা বলা যায় নামমাত্র মূল্যে পণ্য কিনতে পারবেন। এছাড়া পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষেও তারা ক্রেতাদের কাছে অর্ধেক দামে পণ্য বিক্রি করবেন।
লস প্রজেক্টে বাজার করতে আসা পঞ্চাশোর্দ্ধ মধু মিয়া বলেন, ৫ সদস্যের পরিবারের দৈনন্দিন খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছি। কাটছাট করে বাজার করতে হচ্ছে। অনেক পণ্য বাজারের তালিকা থেকে বাদ দিতে হচ্ছে। এমতাবস্থায় এই লস প্রজেক্ট আমার জন্যে অনেকটা স্বস্তি এনে দিয়েছে। এখান থেকে রমজান মাস জুড়ে অর্ধেক দামে পণ্য কিনতে পারবো।
আইডিয়া সমাজকল্যাণ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সহকারী অধ্যাপক হামিদুল হক আরও বলেন, মধ্যবিত্ত দান চায় না, চায় পরিত্রাণ। আমাদের সাধ্যের মধ্যে তাদের জন্যে কিছু করার চেষ্টা করছি। আমাদের এই প্রচেষ্টায় যদি ৫৩৭ পরিবার স্বস্তি পায় তাহলে অন্যান্য এলাকায় সংঘবদ্ধভাবে এরকম উদ্যোগ নিলে তা অনেক মানুষকে স্বস্তি দেবে।