স্মরণে মার্চ ’৭১

0

মাসুদ রানা বাবু ॥ আজ অগ্নিঝরা মার্চের ২২তম দিন। ১৯৭১ সালের এইদিন স্বাধীনতার দাবিতে বিক্ষুব্ধ বাঙালি সভা-সমাবেশ, শোভাযাত্রা ও গগণবিদারী স্লোগানে রাজধানী ঢাকার আকাশ-বাতাস মুখরিত হয়। এ দিন সকালে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য ২৫ মার্চের জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, পাকিস্তানের উভয় অংশের নেতাদের মধ্যে আলোচনাক্রমে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্যমত্যের পরিবেশ সম্প্রসারণের সুযোগ সৃষ্টির জন্য ২৫ মার্চের অধিবেশন স্থগিত করা হলো। প্রেসিডেন্ট ভবনে এদিন সকালে ইয়াহিয়া খান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জুলফিকার আলী ভুট্টো এক বৈঠকে মিলিত হন। এটি ছিল প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ষষ্ঠ বৈঠক। এ বৈঠকে প্রায় সোয়া ঘন্টা স্থায়ী হয়। বৈঠক শেষে প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে নিজ বাসভবনে ফিরে আওয়ামী লীগ প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আন্দোলনে আছি এবং লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
দুপুরে প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে কড়া সামরিক প্রহরায় হোটেলে ফিরে ভুট্টো তার উপদেষ্টাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। বৈঠক শেষে ভুট্টোর নেতৃত্বে পিপলস পার্টির নেতারা সন্ধ্যায় প্রেডিডেন্ট ভবনে যান। রাতে সেখান থেকে ফিরে ভুট্টো হোটেল লাউঞ্জে এক অনির্ধারিত সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট ও আওয়ামী লীগ প্রধান বর্তমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনের জন্য একটি সাধারণ ঐক্যমত্যে পৌঁছেছেন।
এদিকে, জয়বাংলা স্লোগানে মুখরিত হাজার হাজার বাঙালি বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের দিকে দৃপ্ত পদক্ষেপে এগিয়ে আসেন। বাসভবনের সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু তার বক্তৃতায় বলেন, বন্দুক, কামান, মেশিনগান কিছুই জনগণের স্বাধীনতা রোধ করতে পারবে না। ১৯৭১ সালের এই দিনে বায়তুল মোকাররম মসজিদ প্রাঙ্গণে শিশশু-কিশোরদের এক সামবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে শিশু-কিশোররা বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করে। পল্টন ময়দানে সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক বাঙালি সৈনিকরা এ সমাবেশ ও কুচকাওয়াজের আয়োজন করে।