প্রকাশ্যে ভারতীয় অবৈধ প্রসাধন সামগ্রীর বিকিকিনি যশোরের বড় বাজারে

0

শেখ আব্দুল্লাহ হুসাইন ॥ যশোরের বড়বাজারে প্রকাশ্যে ও অবাধে ভারতীয় চোরাই পণ্যের রমরমা ব্যবসা চলছে। প্রতিদিন চোরাকারবারীরা বাজারের হাটখোলা রোডের নির্দিষ্ট দোকানগুলোতে ভারতীয় সুপরিচিত ব্র্যান্ডের নামের প্রসাধন পণ্য পৌঁছে দিচ্ছে, যার অধিকাংশই নকল। ক্রেতারা দেদারসে এসব পণ্য কিনছেন এবং ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। এদিকে অবৈধ এসব পণ্যের সহজ লভ্যতার কারণে ব্যবসায়ে লোকসানের শিকার হচ্ছেন বৈধ ব্যবসায়ীরা।
বাজারের ব্যবসায়ীদের একাধিক সূত্রে জানা যায়, পোটলা, ব্যাগ ও প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে যশোর রেলস্টেশন থেকে রিকশা ও ইজিবাইকে ভারতীয় পণ্য নিয়ে চোরাকারবারীরা প্রতিদিন যশোরের বড়বাজারে ঢুকছে। ভারত থেকে অবৈধ পথে সে দেশের বিভিন্ন নামী-দামি ব্র্যান্ডের নামের প্রসাধনী নিয়ে বেনাপোল থেকে লোকাল ট্রেনে চেপে যশোরে আসছে চোরাকারবারীরা। এদের বেশিরভাগই নারী। বড়বাজারের হাটখোলা রোডে হাটচান্নির কাপড়ের দোকান ও আলুপট্টির মাঝে ৩/৪টি গলিতে বেশ কয়েকটি ছোট ছোট প্রসাধনীর দোকানি এসব পণ্যের ক্রেতা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা কোনো তদারকি সংস্থা সহজেই যাতে এসব দোকান চিহ্নিত করতে না পারে, সেজন্য কৌশল হিসেবে এসব প্রতিষ্ঠানে কোনো সাইনবোর্ড ব্যবহার করা হয় না। নেই স্বত্বাধিকারের নাম ও মোবাইল ফোন নম্বর।
সূত্র জানায়, অবৈধ পথে আনা ভারতীয় প্রসাধনীর ব্যবসা করে দ্রুত লাভবান হওয়া যায়। এ কারণে হাটখোলা রোডের আলুপট্টির বেশ কিছু ব্যবসায়ী আলু-পেঁয়াজের ব্যবসা বাদ দিয়ে প্রসাধনীর দোকান খুলে বসেছেন। আর এসব অসাধু ব্যবসায়ী ও চোরাকারবারীদের কারণে দেশি কোম্পানির উৎপাদিত প্রসাধনী সামগ্রী অবিক্রিত থাকছে। এ কারণে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রসাধনী আমদানিকারকরাও,আর সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব।
বড়বাজারে ভারতীয় চোরাইপণ্যের অবাধ বেচাকেনা বিষয়ে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জুয়েল ইমরান শনিবার লোকসমাজকে জানান, কেউ যেন অবৈধ মালামাল নিয়ে না আসতে পারে আমরা সে বিষয়টা দেখছি এবং দেখবো। তাছাড়া এ ব্যাপারে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হবে।
এ বিষয়ে যশোর বিজিবি-৪৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আহমেদ হাসান জামিল শনিবার লোকসমাজকে জানান, বর্ডার এলাকায় চোরাই পণ্য নিয়ে আসলে সাথে সাথে আমরা ধরতে পারি। যেহেতু এটা বর্ডার এলাকার বাইরে। এ বিষয়ে আমরা মনিটর করছি। খুব শিগগির পুলিশ ও আমরা যৌথ একটা অপারেশন করবো।
এদিকে ভারতীয় নকল প্রসাধনী ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক নিয়ে শনিবার লোকসমাজকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. তৌহিদুর রহমান জানান, যে কোনো নামী ব্র্যান্ডের রং ফর্সাকারী ক্রিমও স্কিনে ক্ষতি করে। এসব প্রসাধনীতে হাই প্রোটিন স্টেরয়েড থাকে, যা ক্ষতিকর। আর মার্কারি থাকলেতো ক্যানসার হতে পারে। আর নকল প্রসাধনীর উপাদান কী তা কেউ বলতে পারবে না।
তিনি জানান, প্রতিদিন তাঁর কাছে অনেক নারী রোগী আসছেন যারা ইতোমধ্যে মুখের ব্রন ও মেছতা নিয়ে আসছেন। এসব প্রসাধনী ব্যবহারের ফলে এমনটা হয়েছে বলে তিনি জানান।