রাজগঞ্জে দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে দিশেহারা নিম্নআয়ের মানুষ

0

ওসমান গণি, রাজগঞ্জ (যশোর) ॥ যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ বাজারে দ্রব্যমূল্য দিনদিন বেড়েই চলেছে। একমাস যেতে না যেতেই পরের মাসে অন্য একটি পণ্যের দাম দ্বিগুণ হচ্ছে। উপজেলার বৃহত্তর এ বাজারে চাল, ডাল, আটা, ময়দা, সুজি, ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ, রসুন, আলু, মাছ, গোশ, চিনি, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও গো খাদ্যসহ প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম হু হু করে বেড়েই চলেছে। হঠাৎ হঠাৎ করে পণ্যের দাম বৃদ্ধিতে দিশেহারা মধ্যবিত্তসহ স্বল্প আয়ের মানুষ।
নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক দামের কারণে স্বল্প আয়ের মানুষ খেয়ে, না খেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
রাজগঞ্জ বাজারের ইজিবাইক চালক শহিদুল ইসলাম, ভ্যানচালক মুন্তাজ আলী, নুরু, আলি মুনছুর, বলেন, সারাদিন ভ্যান ও ইজিবাইক চালিয়ে যে টাকা আয় করি তা দিয়ে সংসার চলেনা। খেয়ে, না খেয়ে কোন রকম বেঁচে আছি।
রাজগঞ্জ কলেজপাড়া গ্রামের রাজমিস্ত্রি তরিকুল ইসলাম ও মনোহরপুর গ্রামের রেজাউল ইসলাম বাবু জানান, গত কয়েকদিনে চাল, ডাল, তেল,নুনসহ প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে। যা আয় করি তা দিয়ে সংসার চলেনা। তারপর ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ তো আছেই। কি যে করবো কিছুই ভেবে পাচ্ছিনা।
বাজারে আটা প্রতিকেজি পাঁচ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৪৫টাকা। মোটা চাল প্রতিকেজি আগে ছিল ৪৫টাকা কেজি। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫০টাকা কেজি। চিকন চাল প্রতিকেজি আগে ছিল ৬০টাকা কেজি ।বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৭০টাকা কেজি। তেল প্রতি লিটার আগে ছিল ২০০টাকা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২১০টাকা লিটার। মসুরির ডাল প্রতিকেজি ছিল ১০০টাকা কেজি। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১৪০টাকা কেজি।
নিন্মআয়ের খেটে খাওয়া মানুষগুলো দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। হু হু করে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছেন এ অঞ্চলের শ্রমজীবী মানুষ। আয় অনেক কম। কিন্তুু খরচ বেশি হওয়ায় আয়- ব্যয়ের হিসাব কষতে কষতে এখন দিন পার করছেন শ্রমজীবী এসব মানুষ। কথা হয় রাজগঞ্জে কাজে আসা হাজরাকাটি গ্রামের শ্রমজীবী হায়াত আলীর সাথে। তিনি বলেন, আজকে দুইশ টাকা আয় করেছি। সংসারে তার স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। প্রতিদিন তার বাজার না করলে খাওয়া হয়না। দুইশ টাকায় এখন আর হাট-বাজার হয়না। সংসারে তার পাঁচজন মানুষ। একদিন আয় না করলে তার পরিবারকে না খেয়ে থাকতে হয়। পাঁচজনের মুখের আহার জোগাতে প্রতিদিন তার কাজে বের হতে হয়।
রাজগঞ্জ বাজারের ফল বিক্রেতা অকিল কুমার জানান, দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে কেনাবেঁচা অনেক কম। প্রতিদিন যে টাকা কেনাবেঁচা হয় তাতে ঘরভাড়া ও বিদ্যুৎ বিলের টাকা ওঠেনা। তারপর পরিবার তো রয়েছেই। প্রতিদিনের আয় এখন অনেক কম। আর হঠাৎ করে পণ্যের দাম অনেক বেশি। তাই কম খেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে কোন রকম বেঁচে আছি বলে জানান এ ফল ব্যবসায়ী।