মনিরামপুরে পুলিশের অনুমতি নিয়ে সভা করার পরও ১০ নেতা-কর্মীকে আটক

0

 

স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর(যশোর)॥ ১১ ফেব্রুয়ারি ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রা সফলের লক্ষ্যে  বুধবার বিকেলে যশোরের মনিরামপুরে পৌর ও থানা বিএনপির যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এসভা শেষ হওয়ার পর পরই সন্ধ্যার দিকে পুলিশ বিএনপির অন্তত ১০ নেতা কর্মীকে আটক করে। এর মধ্যে রাত আটটার দিকে পুলিশ তিনজনকে ছেড়ে দেয়।
থানা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবাল হোসেন পুলিশের ন্যাক্কারজনক ভূমিকার নিন্দা জানিয়ে বলেন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছ থেকে মৌখিক পূর্বানুমতি নিয়ে বাড়ির উঠানে যৌথসভা করা হয়। অথচ সভা শেষে পুলিশ বিনাউষ্কানিতে সেখান থেকে নিরীহ ১০ নেতা কর্মীকে আটক করে। তবে পুলিশের দাবি নাশকতার উদ্দেশ্যে বিএনপির নেতা কর্মীরা বাড়ির উঠানে উপস্থিত হয়ে বৈঠক করছিল। সেখান থেকে ৬ নেতা কর্মীকে আটক এবং তিনটি ককটেল উদ্ধার করা হয়।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, বিদ্যুৎ, তেল, গ্যাসসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর আস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচি ১১ ফেব্রুয়ারি ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রা সফলের লক্ষে  বুধবার বিকেলে যশোরের মনিরামপুরে পৌর ও থানা বিএনপির যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। দলীয় কার্যালয়ের পাশে থানা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবাল হোসেনের প্রাচীরঘেরা বাড়ির উঠানে বিকেল চারটার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে যৌথ সভা শুরু হয়। অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবাল হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সদস্য আব্দুস সালাম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সদস্য মোহাম্মদ মুছা। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মনিরামপুর পৌর বিএনপির সভাপতি খায়রুল ইসলাম, সাধারন সম্পাদক আব্দুল হাই, থানা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মফিজুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা আকতার হোসেন খান, অ্যাডভোকেট মকবুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান, আসাদুজ্জামান মিন্টু, নিস্তার ফারুকসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
নেতাকর্মীসহ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যৌথসভা শেষ হওয়ার প্রাক্কালে বিকেল পাঁচটার দিকে শহীদ ইকবালের বাড়ির গেট(যৌথ সভার স্থান), দলীয় কার্যালয়সহ আশপাশ এলাকায় পোশাকধারী ও সাদা পোশাকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ অবস্থান নেয়।
থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান মিন্টুসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন শান্তিপূর্ণভাবে সভা শেষ করে শহীদ ইকবালের বাড়ির গেটের বাইরে গেলেই পুলিশ সেখান থেকে মুক্তিযোদ্ধা আকতার হোসেন খান, শ্যামকুড় ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আনছার আলী, যশোর নগর বিএনপির সাত নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানকে আটক করে। পরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে আটক করা হয় কুলটিয়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাষ্টার নুরুল ইসলাম, সদর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের, চালুয়াহাটি ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি ইউপি সদস্য বিল্লাল হোসেন, মাহাবুবুর রহমান, পৌরসভার বিজয়রামপুর-জুড়ানপুর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান, ঢাকুরিয়া ইউনিয়ন বিএনপি নেতা রোস্তম আলীসহ অন্তত ১০ নেতাকর্মীকে। পরে অবশ্য রাত আটটার দিকে এদের মধ্যে থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা আকতার হোসেন খান, মাষ্টার নুরুল ইসলাম ও মাষ্টার আব্দুল কাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
তবে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মনিরুজ্জামান জানান, নাশকতার জন্য বাড়িতে বিএনপির নেতাকর্মীরা বৈঠক করছিলেন। সেখান থেকে ছয় নেতাকর্মীকে আটক করে তিনটি ককটেল উদ্ধার করা হয়।তবে শহীদ ইকবালের দাবিকরা পূর্বানুমতি নিয়ে বৈঠকের সত্যতা অস্বীকার করে ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, আমি কি মৌখিকভাবে কোন সভা সমাবেশের অনুমতি দিতে পারি? এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।