তিন বাঘের কবলে রুদ্ধশ্বাস ২৪ ঘণ্টা সুন্দরবনের ৫ রক্ষীর

0

শরণখোলা(বাগেরহাট)সংবাদদাতা॥ সবার সামনেই পুকুরে নেমে মিষ্টি পানি পান করলো দুটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার। তখন দুপুর দুইটা। পানি পান এবং বিশ্রাম শেষে শান্ত ভঙ্গিতে বনে প্রবেশ করলো আবার। না এখানেই শেষ নয়! বাঘ দুটি সামান্য পথ ঘুরে অবস্থান নিলো রান্না ঘরের পাশে। সন্ধ্যার পরে আরও একটি বাঘ যোগ দেয় সেখানে। এ অবস্থায় রুদ্ধশ্বাস রাত কেটেছে বনরক্ষীদের । সকালে উঠেও দেখেছেন সেই বাঘ। অবস্থান করেছিলো  শনিবার সকাল ১০ টা পর্যন্ত। ঘটনা শুরু হয় শুক্রবার দুপুর থেকে পূর্ব সুন্দরবনের সুপতি স্টেশনাধীন চান্দেশ্বর ফরেস্ট অফিসে।
চান্দেশ্বর ক্যাম্পের বনরক্ষী তরুন মজুমদার জানান, সুন্দরবনে অনেক বছর চাকরি করলেও তারা এমন পরিস্থিতির শিকার হননি কখনো। এর আগে কখনো জনসমুক্ষে এমনভাবে বাঘ আসতে দেখেননি। প্রকাশ্যে বাঘের এমন অবস্থান তাদের মধ্যে শঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে বাঘ বনের মধ্যে চলে যাওয়ায়া এখন স্বস্তিতে রয়েছেন তারা।
চান্দেশ্বর ফরেস্ট ক্যাম্প ইনর্চাজ ফারুক শেখ মুঠোফোনে জানান, শুক্রবার দুপুর ২ টা থেকে তিনটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার তাদের প্রায় ২৪ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। তিনি আরও জানান, প্রথমে বাঘ দুটিকে পুকুর পাড়ে দেখে ভয় পেয়ে যান তারা। তিনিসহ অপর ৪ বনরক্ষী দ্রুত তাদের আবাসিক কক্ষে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন । বাঘ দুটি পুকুরে নেমে পানি পান শেষে কিছু সময় পুকুর পাড়ে বিশ্রাম নেয়। পরে সামান্য পথ ঘুরে এসে অবস্থান নেয় অফিসের রান্না ঘরের পাশে। সেখানে এদুটি বাঘের সাথে আরও একটি বাঘ যোগ দেয়। সারা রাত পুকুর পাড়ে এবং রান্না ঘরে অবস্থান নেয় বাঘ তিনটি। এ অবস্থায় রান্না ও খাওয়া দাওয়াও বন্ধ হয়ে যায় অফিসের ৫ বনরক্ষীর। সকালে উঠে দেখেন বাঘ তিনটি অফিসের অদূরে বনে ঘোরাঘুরি করছে।  শনিবার বেলা ১০টার দিকে অফিস চত্বর ত্যাগ করে বাঘের দল।
সুন্দরবন ওয়াইল্ড টিমের সদস্য আবুল আসলাম তুহী জানান, প্রজননকালে বাঘ এ ভাবে অস্থির সময় কাটায়। তারা ওই জায়গাটিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করার কারণে দীর্ঘ সময় অবস্থান নিয়েছে হয়তো।
এ ব্যাপারে সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা সামসুল আরেফিন জানান, যেহেতু বাঘের প্রজনন মৌসুম চলছে। তাই তাদের আচরণ এরকম হতে পারে। স্বাভাবিক সময় বাঘ সাধারণত এ রকমের আচরণ করে না। তারা নিসঙ্গই থাকতে পছন্দ করে। স্থানীয় বনরক্ষীদের সর্তক থাকতে বলা হয়েছে।